বিশ্ব বেতার দিবস: চ্যালেঞ্জের মুখে কি বেতার?

Posted by

১৩ ফেব্রুয়ারি জাতিসংঘের অঙ্গ সংগঠন ইউনেস্কোর পৃষ্ঠপোষকতায় বিশ্বব্যাপী পালিত হবে জাতিসংঘ ঘোষিত ‘ বিশ্ব বেতার দিবস।’ বিশ্ব বেতার দিবস উদযাপনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের কাছে একটি অনুসরণীয় মডেল দেশ হিসেবে পরিচিত লাভ করেছে। সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় ২০১২ সাল থেকে বাংলাদেশে বিশ্ব বেতার দিবস পালিত হচ্ছে। 

বিশ্ব বেতার দিবসবেতার বিশ্বের ঐতিহ্যবাহী একটি গণমাধ্যম। বেতার সর্বাপেক্ষা প্রাচীন ও জনপ্রিয় গণমাধ্যমও বটে।

জাতীয় জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে, তা হোক সংকটে বা দুর্যোগে, বিশেষত আমাদের মুক্তিযুদ্ধে রেডিওর প্রেরণাদায়ক ভূমিকার কথা সবাই একবাক্যে স্বীকার করেন।

একাত্তরে ‘স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র’ ও বিবিসির সংবাদ রণাঙ্গনে যেমন মুক্তিযোদ্ধাদের ধমনীতে নতুন প্রাণ সঞ্চার করেছিল, তেমনি অবরুদ্ধ বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষের প্রাণে জাগিয়ে রেখেছিল স্বাধীনতার আকাক্সক্ষা।

সেদিন গণমাধ্যম হিসেবে রেডিওর শক্তি ও সম্ভাবনার দিকটি সবার কাছে উন্মোচিত হয়েছিল।

মসরুর জুনাইদ-এর ব্লগে আরও পড়ুন- 

রেডিওর সুবিধা হলো এই মাধ্যম সহজে এবং দ্রুত ব্যাপক জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছে যায়। অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে ও দেশের সর্বত্র বিদ্যুৎ সুবিধা না থাকায় তথ্য ও গুরুত্বপূর্ণ সংবাদের জন্য দৈনিক সংবাদপত্র কিংবা টেলিভিশনের পরিবর্তে প্রত্যন্ত এলাকার ব্যাপক জনগোষ্ঠীকে এখনো রেডিওর ওপর নির্ভর করতে হয়।

ডিজিটাল প্রযুক্তির সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার সুবাদে অন্যান্য খাতের মতো রেডিওর ক্ষেত্রেও এসেছে নজরকাড়া পরিবর্তনের ছোঁয়া।

অনুষ্ঠানের মান, বিষয়বস্তুর প্রাসঙ্গিকতা, উপস্থাপনার ঢং ও প্রযুক্তির যথোপযুক্ত ব্যবহারের ফলে রেডিও গণমাধ্যমের প্রতিযোগিতায় নিজেকে নতুন করে খাপ খাইয়ে নিচ্ছে।

মোবাইলের ব্যাপক সম্প্রসারণের ফলে মানুষকে এখন আর নতুন করে রেডিও সেট কিনতে হচ্ছে না, সব মোবাইল ফোনেই এফএম রেডিও শোনার সুবিধা থাকায় মানুষ মোবাইল ফোনেই রেডিও শুনতে পারছে।

আবার চাইলেই যখন খুশি তখন কল করে কিংবা এসএমএএস-এর মাধ্যমে প্রশ্ন ও অভিমত জানাতে পারছে।

শুধু প্রান্তিক এলাকায়ই নয়, ব্যস্ত নাগরিক জীবনেও রেডিও হয়ে উঠেছে তথ্যপ্রাপ্তি ও বিনোদনের নির্ভরযোগ্য উৎস।

একজন ব্যস্ত নাগরিক পথে বসেই জানতে পারছেন দেশের সবশেষ হালচাল, যানজট পরিস্থিতি, আবহাওয়ার আগাম সতর্কবার্তা এমন কি বাজার দরও।

সুতরাং, যারা ভাবছেন স্যাটেলাইটের দাপটে রেডিও পিছু হটছে, তাদের ধারণা যে নিতান্ত অমূলক তা উল্লেখ না করলেও চলে।

বিশ্ব বেতার দিবস এর সাতকাহন 

সংবাদ ও বিনোদনের অনুপম মাধ্যম রেডিওর গুরুত্ব বিবেচনায় প্রতি বছর ১৩ই ফেব্রুয়ারি পালন হয় বিশ্ব বেতার দিবস। স্প্যানিশ একাডেমি অব বিশ্ব বেতার দিবস পালনের প্রথম উদ্যোগ নেয়।

মূলত স্পেনের অনুরোধে ইউনেস্কো জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে ২০০৮ সালে বিশ্ব বেতার দিবস প্রতিষ্ঠা করে।

নানা বিতর্কের পর স্প্যানিশ একাডেমি ৩০ অক্টোবর তারিখটি বিশ্ব বেতার দিবস হিসেবে ধার্য করে। সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিক রেডিও ইন্ডাস্ট্রির সমর্থনও লাভ করে।

তবে ২০১১ সালে ইউনেস্কোর এক্সিকিউটিভ বোর্ড দিবসটির দিন পাল্টে ১৩ ফেব্রুয়ারি নির্ধারণ করেন। যদিও বিশ্ব বেতার দিবস উৎসবটি খুবই নবীন পারতপক্ষে ১৯৪৬ সালের এদিনে জন্ম লাভ করেছিল জাতিসংঘ রেডিও।

মূলত জনসাধারণকে রেডিও সম্পর্কে সচেতন করাই হলো বিশ্ব রেডিওর উদ্দেশ্য।

২০১২ সালেই সর্বপ্রথম বিশ্বব্যাপী বেতার দিবস পালন করা হয়। এই উপলক্ষে একই বছরে ‘আন্তর্জাতিক রেডিও কমিটি’ নামক একটি কমিটির জন্ম হয়।

বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সমপ্রচার সংস্থা যথা: ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন (আইটিইউ), স্প্যানিশ রেডিও একাডেমী, ইন্টারন্যাশনাল এসোসিয়েশন অব ব্রডকাস্টিং (আইএবি), এশিয়া প্যাসিফিক ব্রডকাস্টিং ইউনিয়ন (এবিইউ), আরব স্টেট ব্রডকাস্টিং ইউনিয়ন (এএসবিইউ), ইউরোপিয়ান ব্রডকাস্টিং ইউনিয়ন (ইবিইউ), এ্যাসোসিয়েশন অব ইউরোপিয়ান রেডিওস (এইআর), ওয়ার্ল্ড এ্যাসোসিয়েশন অব কমিউনিটি রেডিও ব্রডকাস্টিং, বাংলাদেশ এনজিও’স নেটওয়ার্ক ফর রেডিও এন্ড কমিউনিকেশন্স (বিএনএনআরসি), দ্যা আফ্রিকান ইউনিয়ন অব ব্রডকাস্টিং (এ ইউ বি), ইন্টারন্যাশনাল রেডিও এন্ড টেলিভিশন ইউনিয়ন (ইউ আর টি আই) সহ আরো বিভিন্ন সংস্থার অংশগ্রহণে গড়ে ওঠে এই কমিটি।

রেডিওর মাধ্যমে নানাবিধ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এবং শিক্ষণীয় বিষয়বস্তু প্রচারই এই কমিটির মূল প্রয়াস।

বিশ্ব বেতার দিবস এর প্রধান অনুষ্ঠান পালন করা হয় ইউনেস্কো সংস্থার সদর দফতর-প্যারিসে।

এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার জন্য আমন্ত্রিত রেডিও সম্প্রচার সংস্থাগুলো। বিশ্ব বেতার দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সম্মেলনে মূলত বাস্তব সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়।

গণমানুষের হৃদয়ে বেতার

এক সময় বেতার ছিল গণমানুষের অন্যতম বিনোদন সঙ্গী। শহর নগর ছড়িয়ে গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোয়ও বেতার পৌঁছে গিয়েছিল। এখনো দুর্যোগকালে বেতার মানুষের প্রধান হাতিয়ার।

রেডিও পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ বেতার নামে স্বীকৃতি পাওয়া অবধি বাংলাদেশ বেতার জনগণের প্রায় সারাক্ষণের সঙ্গী হয়ে থেকেছে।

যে উদ্দেশ্য নিয়ে বেতার যাত্রা শুরু করেছিল, বলা চলে সেই উদ্দেশ্য পূরণ হয়েছে। বেতার দেশ, মাটি ও মানুষের কথা বলে। বেতার জনস্বাস্থ্য সম্পর্কে কথা বলে। বেতার কৃষি উন্নয়নের কথা বলে।

জঙ্গি, সন্ত্রাস ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে বেতারের প্রচারণা অনেক এগিয়ে। বাল্যবিয়ে, যৌতুক, নারী ও শিশু অধিকারের প্রচারণায় বেতারের ভূমিকা অপরিসীম। তথ্য অধিকার বিষয়ে জানারও অন্যতম মাধ্যম এই বেতার।

কী নেই বেতারে? বিনোদন, ম্যাগাজিন, আড্ডা, কৌতুক সবই আছে। সংসদের অধিবেশন, খেলাধুলার সরাসরি সম্প্রচার, প্রতি ঘণ্টার আপডেট সংবাদ- সবই আছে এই বেতারে।

যুগের চাহিদা কতটা মেটাতে পারছে বেতার?

বিবিসি বাংলা এক প্রতিবেদনে উঠে আসে, বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তির প্রসার রেডিও বা বেতারের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

অনেকেই বলছেন, এখন বেতারকে ইন্টারনেট এবং টেলিভিশনের সাথে টিকে থাকার লড়াই করতে হচ্ছে।

বাংলাদেশের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ বেতার সম্প্রচার জগতে পরিবর্তনের এই সময়টাতে কতটা তাল মেলাতে পারছে, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।

এমন প্রেক্ষাপটেই নানান কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আগামিকাল বিশ্ব বেতার দিবস পালন করা হবে।

তবে বাংলাদেশ বেতারের কর্মকর্তারা বলেছেন, পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ নিয়ে তাদের এগুনোর ক্ষেত্রে বেতারের জনপ্রিয়তা বাড়ছে।

ঢাকার কাঁঠালবাগান এলাকায় রাস্তার পাশে পুরনো একটি চায়ের দোকানে সারাক্ষণই বড় সেটে বাংলাদেশ বেতার বাজতো। এখন সেটা অতীত ঐ দোকান মালিকের কাছে।

কয়েক বছর আগে রেডিওটি নষ্ট হওয়ার পর তা সরিয়ে ফেলা হয়।দোকানের মালিক মোহাম্মদ ইউসুফ এখন মাঝে মধ্যে বিশেষ করে বাংলাদেশের ক্রিকেট খেলা চলার সময় রেডিও শোনেন নিজের মোবাইল ফোনের সেটে।তাঁর দোকানে আসা মানুষের জন্যও বড় সেটে রেডিও বাজানোর তাগিদ অনুভব করেন না।

অনেকেই বলছেন, এখন বেতারকে ইন্টারনেট এবং টেলিভিশনের সাথে টিকে থাকার লড়াই করতে হচ্ছে।

তবে আগারগাঁ এলাকায় রাস্তার পাশে দাঁড় করিয়ে রাখা একটি প্রাইভেট কারে বেতারের অনুষ্ঠান বাজছিল।

গাড়িটির চালক ইদ্রিসুর রহমান বলছিলেন,গাড়ি যতক্ষণ চলে, পুরো সময়ই তিনি বেতার শোনেন। সেখানেই কয়েকজন বলছিলেন, তারা বেতারে গানসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান শোনেন।অনেক সময় খবরও শোনেন।

তথ্য প্রযুক্তির পরিবর্তনের সাথে দেশের সবচেয়ে পুরনো এবং রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত বাংলাদেশ বেতার কতটা তাল মেলাতে পারছে, সেই প্রশ্ন যে উঠছে।

সেই প্রেক্ষাপটে বেতারের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক শাহজাদী আঞ্জুমান আরা বলছিলেন, তারা পরিস্থিতিটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েই পরিকল্পনা করছেন

কমিউনিটি রেডিও : গ্রামীণ জনগণের কণ্ঠস্বর

কমিউনিটি রেডিও এক ধরনের বেতার সেবা যাতে একটি নির্দিষ্ট এলাকার জন্য ঐ এলাকার মানুষের পছন্দনীয় অনুষ্ঠান সম্প্রচার করে, কিন্তু রেডিও গুলো একটি শক্তিশালী সম্প্রচারকারী দলের তত্ত্ববধানে হয়ে থাকে।

নির্দিষ্ট ভৌগলিক সীমারেখার মধ্যে সম্প্রচার কার্যক্রম পরিচালন করা কমিউনিটি রেডিও গুলো এলাকাবাসীর অংশগ্রহণ ও তাদের জীবন কেন্দ্রিক সমস্যা ও সম্ভাবনা, চাওয়া- পাওয়া ইত্যাদির উপর অনুষ্ঠান নির্মানে গুরুত্ব দেয়া হয়।

মসরুর জুনাইদ-এর ব্লগে আরও পড়ুন- 

সংবাদ, তথ্য বিনোদন, নাটক, জীর্বিকা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আলোচনা অর্থাৎ স্থানীয় সর্ব বিষয়ে প্রচার প্রক্রিয়ায় এলাকাবাসী সরাসরি অংশগ্রহণ করে।

স্থানীয় যে কোনো গুরুত্বপুর্ণ তথ্য সংবাদ এ কেন্দ্র থেকে স্থানীয় জনগণ পেয়ে থাকে। যার মাধ্যমে বিনোদন, কৃষি, স্বাস্থ্য এবং শিক্ষা সম্পর্কিত বিষয় অনুষ্ঠানাদি প্রচার করে।

বাংলাদেশে তথ্য মন্ত্রণালয় ২০১০ সালের এপ্রিল মাসে প্রথমবার কমিউনিটি রেডিও পরিচালনার অনুমোদন দেয়। অনুমোদন পাওয়ার পর এক এক রেডিও এক এক সময় সম্প্রচার শুরু করে।

বর্তমানে দেশব্যাপী ১৭ টি কমিউনিটি রেডিও স্টেশন রয়েছে। যার প্রত্যেকটিই ১৭ বর্গ কিলোমিটারের পরিধিতে সম্প্রচার করে থাকে, যেগুলোর অধিকাংশই ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা।

আরও ১৫টি কমিউনিটি রেডিওর প্রাথমিক অনুমোদন দেয়া হয়েছে বলে তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে।

বাংলাদেশে এফএম

বাংলাদেশে বর্তমানে ২২টি প্রাইভেট এফএম এবং ৩২টি কমিউনিটি রেডিও অনুষ্ঠান সম্প্রচার করছে। এছাড়া, বাংলাদেশ বেতার ১২টি আঞ্চলিক বেতার কেন্দ্র এবং ৩৫টি এফএম পরিচালনা করছে।

বেতার শুধু বিনোদনের মাধ্যম নয়, শিক্ষার মাধ্যমও বটে। আবহাওয়ার খবরের জন্য নদীমাতৃক এলাকার একমাত্র সম্বল রেডিও।

জাতীয় জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে, সংকটে বা দুর্যোগে আমাদের জন্য রেডিও প্রেরণাদায়ক।

‘আগামীর বাংলাদেশ হবে রেডিওর বাংলাদেশ’- এই স্লোগানের সত্যতা মেনে নিয়ে ও উন্নয়নে রেডিওর অপরিসীম সম্ভাবনার দিকটি যথার্থভাবে বিবেচনা করে সরকার ইতোমধ্যে ২৮টি প্রাইভেট এফএম এবং ৩২টি কমিউনিটি রেডিওর অনুমোদন দিয়েছে।

এ ছাড়া সরকারের প্রত্যক্ষ সহায়তায বাংলাদেশ বেতার দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ১২টি আঞ্চলিক বেতার কেন্দ্র ও ৩৫টি এফএম পরিচালনা করছে।

ভারত শুনছে বাংলাদেশ বেতার

ভারতে বাংলাদেশ বেতারের সম্প্রচার শুরু হয়েছে। গত ১৪ জানুয়ারি নয়াদিল্লিতে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ ও ভারতের তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী প্রকাশ জাভাদকার বাংলাদেশ বেতার ও ভারতের আকাশবাণী বেতারের মধ্যে অনুষ্ঠান বিনিময় কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। এরপরই ভারতে বাংলাদেশ বেতারের প্রচার শুরু হয়।

বাংলাদেশ বেতারের অনুষ্ঠান আকাশবাণী চ্যানেলে কলকাতায় এফএম ১০০.১ মেগাহার্টজ, আগরতলায় এফএম ১০১.৬ মেগাহার্টজ এবং আকাশবাণী অ্যাপ ও ডিটিএইচের মাধ্যমে পুরো ভারতে ভারতীয় সময় সকাল সাড়ে ৭টা থেকে সাড়ে ৯টা ও সন্ধ্যা সাড়ে ৫টা থেকে সাড়ে ৭টায় একযোগে সম্প্রচার শুরু হলো। একই সময়ে আকাশবাণীর অনুষ্ঠান বাংলাদেশ বেতারের এফএম ১০৪ মেগাহার্টজে সম্প্রচার শুরু হলো।

২০১৮ সালের ৯ এপ্রিল প্রসার ভারতী ও বাংলাদেশ বেতারের মধ্যে সম্পাদিত সমঝোতা স্মারকের ভিত্তিতে এ কার্যক্রম দুই দেশের গণমাধ্যম খাতে সহযোগিতার নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হল।

চ্যালেঞ্জের মুখে কি বেতার?

তথ্য প্রযুক্তির পরিবর্তনের সাথে দেশের বেতার কেন্দ্রগুলো কতটা তাল মেলাতে পারছে, সেই প্রশ্ন যে উঠছে।  একটি বেসরকারি সংস্থার গবেষণায় বলা হয়েছে, প্রায় দেড় কোটি মানুষ রেডিও শোনে।

এর বড় অংশ বাংলাদেশ বেতারের শ্রোতা।তবে এই শ্রোতাদের বেশির ভাগই দুর্গম এবং প্রত্যন্ত এলাকার।

অনেকের মতে”বেতার হেরে যাবে, এমন কথা ভুল প্রমাণিত হয়েছে।বেতার যেমন তথ্য দেয়, কৃষিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান প্রচার করা হয়।ফলে বেতার মানুষের জীবনের সাথে মিশে গেছে।”

বেতারের কর্মকর্তারা বলছেন, শুধু দুর্গম, সুবিধাবঞ্চিত বা প্রত্যন্ত এলাকার মানুষ নয়,নগরীর মানুষ এবং তরুণরাও যেন বেতারের অনুষ্ঠান শোনার জন্য আগ্রহী হয়।সেজন্য তারা বিভিন্ন পরিকল্পনা নিচ্ছেন।

লেখক: মসরুর জুনাইদ , সম্পাদক- সিটিজি টাইমস .কম।