এপারে সাতকানিয়ার সীমান্ত এলাকা শিলঘাটা; ওপারে চন্দনাইশ ও বান্দরবনের সীমান্ত এলাকা লেকঘাটা।
সাঙ্গু নদীর স্রোত মন্থর, কিন্তু পানিতে ঘোলাটে ভাব—নতুন পানির নিশানা বোঝা যায়। উজানে কোথাও জোর বৃষ্টি হয়ে গেছে।
এপারে থেকে ওপারে যাওয়ার একমাত্র ঘাটের মাঝি ইউসুফ। পানি তুলে মুখে-চোখে ঝাপটা মারছে।
মসরুর জুনাইদ-এর ব্লগে আরও পড়ুন-
- মগের মুল্লুক: মগদের আদি নিবাস ‘ইংরা হংপ্রা’ সাতকানিয়ায়
- সিটিজি টাইমস ডটকম ও ভবিষ্যৎ জার্নালিজম
- সিটিজি টাইমস এখন ৩ লাখ+ পাঠকের অনলাইন!
- একজন মসরুর জুনাইদ ও ‘নান্দনিক সাতকানিয়া আন্দোলন’
তারপর লম্বা লম্বা নিশ্বাস নিতে নিতে ঘাড় নিচু করে পানির রং দেখতে দেখতে ইউসুফ মাঝি বইঠায় নদীর স্রোত কাটছে। যেন অনন্তকাল ধরে এই কাজটি তাকে করে যেতে হবে।
আচ্ছা,মানুষের জীবনের রং কি দেখা যায় নদীর পানিতে?
কী দেখেন? ও দাদা, কী দেখেন পানির ভিতর? আমার আর মাহাফুজ ভাইয়ের প্রশ্ন।
ইউসুফ মাঝি হাসে, না কিছু দেখে না সে। কথাটা উচ্চারণ করে না সে, কিন্তু তার হাসিতে বোঝা যায়!হাসিটা ভারি বিষণ্ন। ওইটুকুই তার হাসি। হাসি বলো, আলাপ বলো—সব ওই ঠোঁটের টানটুকুর মধ্যে ধরা।
এসময় সওয়ারি এল দু-চারজন। কিন্তু সে কোনো আগ্রহ দেখাল না। ইউসুফ মাঝি ওই সময় পানির রং দেখছিল। তার দৃষ্টিতে ধ্যান ছিল, মনে নিস্পৃহ একটা ভাব ছিল এবং স্মৃতির ভেতর কোথাও কিছু তীব্র হয়ে ফেটে পড়তে চাইছিল।
ইউসুফ মাঝির মনে পড়ে তালত ভাইয়ের হাত ধরে পালিয়ে যাওয়া ৩ বছর সংসার করা স্ত্রীর কথা। আর একমাত্র ৬ মাস বয়সী ছেলের কথা মনে পড়তেই নদী আর চোখের পানিতে একাকার।
ছেলেকে দেখতে না দেওয়া। ভরণপোষণ মামলায় দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে ইউসুফ মাঝির জীবন।
স্রোত বড় ধীর। ওই ধীর স্রোতের বিশাল জলরাশির ভেতর কেমন অন্ধকারের নিশানা দেখতে পায় ইউসুফ মাঝি একেক সময়।
মসরুর জুনাইদ-এর ব্লগে আরও পড়ুন-
- সাংবাদিকতা নয়, পাবলিক রিলেশনস
- ভাল রেডিও উপস্থাপনার চাবিকাঠি
- ‘To-Let’ এর শহর চট্টগ্রাম কি ভবিষ্যতের ভুতুড়ে নগরী?
ওই অন্ধকার কালোর ভেতরে ফের লাল রং একেক সময় ঝলক দিয়ে ওঠে। ইউসুফ মাঝি অন্ধকার, আগুন, নদীর মানুষের চিৎকার—সব একসঙ্গে দেখতে ও শুনতে পায়।
মসরুর জুনাইদ/ সম্পাদক- সিটিজি টাইমস ডটকম