সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং : বিশ্বজুড়ে এখন করোনাভাইরাসের আতঙ্ক। আতঙ্কিত হওয়ার মতো বিষয়। এই সময়ে বেশ কিছু শব্দ মানুষের মুখে মুখে ঘুরছে। কিন্তু এসব শব্দের মানে আসলে কী? চলুন জেনে নেওয়া যাক সে কথা:
সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং বা সামাজিক দূরত্ব
সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং এর মানে হলো, আপনি অকারণে বাইরে যাবেন না। ঘরে থাকবেন। কোনো জরুরি প্রয়োজনে যেমন খাবারদাবার বা ওষুধ কিনতে বাইরে যেতে পারেন। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন, হাত ধোবেন।
আরো পড়ুন- অনলাইনে ছবি বিক্রি করে বাড়তি আয়!
ভিড়ে যাবেন না, গণপরিবহনে পারতপক্ষে উঠবেন না, ভ্রমণ করবেন না, সিনেমা–থিয়েটার–প্রার্থনাগৃহে যাবেন না। অন্যের সঙ্গে ছয় ফুট দূরত্ব বজায় রাখবেন। বন্ধুবান্ধবের কাছে যাবেন না, তাঁরাও আসবেন না।
এই মুহূর্তে আমাদের সবার সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং বা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা উচিত। আমি সুস্থ না অসুস্থ কিছু যায়–আসে না।
আইসোলেশন বা বিচ্ছিন্ন থাকা
যাঁরা দেশের বাইরে থেকে এসেছেন বা সম্ভাব্য রোগীদের সংস্পর্শে এসেছেন বা নিশ্চিতভাবে করোনায় আক্রান্ত মানুষের সঙ্গে মিশেছেন, তাঁরা নিজেদের নিজের ঘরে আলাদা রাখবেন। তাঁরা কাউকে স্পর্শ করবেন না। নিজেদের স্বাস্থ্য নিজেরা পর্যবেক্ষণ করবেন। জ্বর মাপবেন। গলায় ব্যথা হচ্ছে কি না দেখবেন।
যাঁরা জ্বর অনুভব করছেন, গলায় ব্যথা অনুভব করছেন, শ্বাসকষ্টে ভুগছেন, তাঁরাও আইসোলেশনে থাকবেন। মানে বিচ্ছিন্ন থাকবেন। তাঁদের সবার করোনাভাইরাস পরীক্ষার দরকার নেই। যতক্ষণ না আপনার বয়স ৬০ বছরের বেশি হয় বা রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা দুর্বল হয়, ততক্ষণ পরীক্ষা লাগবে না। ডাক্তারের সঙ্গে ফোনে কথা বলবেন।
আপনি যদি একা থাকেন, সাত দিন নিজেকে মনিটর করুন। যদি পরিবারের সঙ্গে থাকেন, ১৪ দিন সবাইকে বিচ্ছিন্ন থাকতে হবে। পরিস্থিতি বুঝে ১৪ দিন পর চলাচল করতে পারবেন বা পারবেন না।
ধরা যাক, আপনার বাসায় একজন ফ্লুর লক্ষণে ভুগছে। এ জন্য আপনার পরিবার বিচ্ছিন্নতা বা আইসোলেশনে গেল। ষষ্ঠ দিনে আপনার সর্দি শুরু হলো।
আপনাকে আরও সাত দিন বিচ্ছিন্ন থাকতে হবে। এর মধ্যে পরিবারের আরেকজন ১৩ নম্বর দিনে ভুগতে শুরু করল, তাহলে তাকে ২০ দিন থাকতে হবে আইসোলেশনে।
কোয়ারেন্টিন বা সংগনিরোধ
এটা তাঁদের জন্য, যাঁরা করোনাভাইরাস টেস্টে পজিটিভ বলে পরীক্ষিত হয়েছেন বা টেস্ট করতে দিয়ে রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছেন। তাঁরা ঘরে থাকবেন। তাঁদের সংস্পর্শে কেউ যাবে না। যিনি যাবেন, তাঁকে অবশ্যই বিধিমোতাবেক প্রস্তুতি, সাবধানতা অবলম্বন করে যেতে হবে।
হাসপাতালে যেতে হলে আগে থেকে জানিয়ে যেতে হবে। যাঁরা নিয়ে যাবেন, তাঁদের জানাতে হবে। প্রয়োজনীয় সতর্কতা এবং বিধি মেনে নিয়ে যেতে হবে।
তবে ধরা যাক, আপনি একটা জাহাজে ছিলেন, যে জাহাজে করোনাভাইরাসবাহী যাত্রী ছিলেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। সে ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ আপনাকে কোয়ারেন্টিনে রাখতে পারে। যেমন উহান থেকে আসা মানুষদের ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছিল।
লকডাউন বা বদ্ধাবস্থা
এটা স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থা নয়। এটা প্রশাসনিক বা আইনগত বা সরকারি ব্যবস্থা। এর মানে হলো, বিমান বন্ধ, সীমানা বন্ধ, চলাচল বন্ধ। রাস্তাঘাট বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে। এটা কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত, নাগরিকের স্বতঃপ্রণোদিত সিদ্ধান্ত নয়। কর্তৃপক্ষ যা বলবে, তা শুনতে হবে।
আরও পড়ুন – ব্লগ থেকে আয় করবেন যেভাবে
এখন দরকার সবারই সামাজিক দূরত্ব বা সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং বজায় রাখা। বারবার সাবান-পানি দিয়ে ২০ সেকেন্ডে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা–নির্দেশিত পদ্ধতিতে হাত ধোয়া। চোখ, নাক ও মুখে হাত না দেওয়া।
(সূত্র: বিবিসি, এনপিআর, টিভিও অনলাইন)