একজন মসরুর জুনাইদ ও ‘নান্দনিক সাতকানিয়া আন্দোলন’

Posted by

মসরুর জুনাইদ (Mosrur Zunaid): চট্টগ্রামের প্রথম জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল সিটিজি টাইমস’র সম্পাদক সাতকানিয়ার অহংকার তরুন উদীয়মান নান্দনিক সাতকানিয়া আন্দোলনের স্বপ্নদ্রষ্টা। 

Mosrur Zunaid - মসরুর জুনাইদসবুজ-শ্যামলে ঘেরা, সাঙ্গু, ডলু নদী বেষ্টিত ও পাহাড়, খাল-বিলসহ নানা ঐতিহ্যের ধারক বাহক সাতকানিয়া উপজেলা। শিক্ষা, সংস্কৃতি, অর্থনীতি ও রাজনৈতিক ভাবে সারাদেশ জুড়ে রয়েছে এ উপজেলার খ্যাতি।

বিশ্বের বেশীর ভাগ দেশে ব্যবসা অঙ্গনকে বাতিয়ে রাখা এই সাতকানিয়া উপজেলার মানুষ সব দিকদিয়ে এগিয়ে গেলেও সময় উপযোগী উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি অনেক এলাকায়।

বাংলাদেশ স্বাধীনতার যুদ্ধের আগে ও পরে রাজনৈতিকভাবে অবহেলিত হয়ে উন্নয়নের মাত্রা ছিল দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের চেয়ে কম।

বাংলাদেশের সুচনা লগ্ন থেকে রাজনৈতিকভাবে অবহেলিত হয়ে প্রায় জিমিয়ে পড়েছে সাতকানিয়ার উন্নয়ন, অগ্রগতি ও সামাজিক উন্নতি।

হাজারো ঐতিহ্য নিয়ে গঠিত সাতকানিয়া উপজেলাকে একটি নান্দনিক উপজেলা হিসেবে গড়ে তোলতে দীর্ঘদিন থেকে কাজ করে এগিয়ে আছে চট্টগ্রামের প্রথম জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল সিটিজি টাইমস’র সম্পাদক সাতকানিয়ার অহংকার তরুন উদীয়মান নান্দনিক সাতকানিয়া আন্দোলনের স্বপ্নদ্রষ্টা মসরুর জুনাইদ।

একজন মসরুর জুনাইদ এর গল্প

সাতকানিয়া উপজেলার পূর্ব গাটিয়া ডেঙ্গা গ্রামে ১৯৮৭ সালে মসরুর জুনাইদ এক অভিজাত পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন।

প্রাইমারী শিক্ষা থেকে শুরু করে শিক্ষা জীবনের প্রতিটি স্তরে কৃতিত্বের সাক্ষর রেখে গেছেন তিনি।

সর্বশেষ ঐতিহ্যবাহী চট্টগ্রাম কলেজ থেকে কৃতিত্বের সাথে স্নাতকসম্মান ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।

তিনি ঐতিহ্যবাহী সাতকানিয়া আলিয়া মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ ও সাতকানিয়া আদালত মসজিদের খতিব মরহুম আল্লামা আহমদ কবির খান আরিফ এর দৌহিত্র।

বাবা সাবেক মুহতামিম (অধ্যক্ষ) মাওলানা আব্দুল মোমেন ও মা জোবেদা খানম আরিফার সংসারে তিনি বড় ছেলে।

ছাত্রজীবন শেষ করেই দেশের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে একটি চ্যালেঞ্জিং কাজের মাধ্যমে তিনি কর্মজীবন শুরু করেন।

একজন প্রযুক্তিবিদ ও সাংবাদকর্মী হিসেবে মসরুর জুনাইদ এর কর্মজীবনের সুচনা।

২০১২ সালের শুরুতে আনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে সিটিজি টাইমস ডটকমের যাত্রা শুরু তার সম্পাদনায়।

তখন সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কথা বললেও তখন এত সংখ্যক মানুষের মতো কেউ সেটা কি জিনিস বুঝতোই না।

দেশে অনলাইন নিউজ পোর্টালের ডানা মেলা শুরুর দিকে সিটিজি টাইমস ডটকমের যাত্রা অত্যন্ত সুন্দর ও সুচারুরুপে সম্পাদনায় পুরো দেশে প্রসংশিত হয়।

তিনি জানান, ‘’গুটি কয়েক মানুষ যখন এ ডিজিটাল বাংলাদেশের জানালায় উঁকি মারছিল তখন আমিও এসে দাড়িয়েছিলাম এই সারিতে।

২০০১ সালে হট মেইলের মাধ্যমে অনলাইন জগতে হাতেখড়ি আমার।

সেখান থেকে আজ আমি একজন ডিজিটাল কর্মী এবং জনপ্রিয় নিউজ পোর্টাল সিটিজি টাইমস ডটকমের সম্পাদক ও প্রকাশক।

কেন এবং কিভাবে জড়ালাম

সিটিজি টাইমস ডটকমের মাধ্যমে আমার জীবনের পথচলা। কিন্তু এর আগে কেন এবং কিভাবে এই অনলাইন জগতে এসে পড়লাম তা না বললে নয়।

কারন আমার পথ হতে পারে হাজারো মসরুর জুনাইদের বেঁচে থাকার অবলম্বন।

বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তির পথ। যেভাবে পথ খোঁজে নিয়েছি আমি। ছাত্রজীবনে (অষ্টম শ্রেণী) শুরু করি বই-খাতা, কলম ব্যবসা।

২০০৬ সালে থেকে আউটসোর্সিং এর পাশা-পাশি শুরু করি আইটি ব্যবসা। পাশা-পাশি লেখালেখির প্রতি ঝোঁক ছিল একটু বেশি। তাই গণমাধ্যমকে বেছে নিই।

সাংবাদিকতায় ১৯ বছর..

২০০১ সালে ‘মাসিক সংস্কার’ কিশোর পত্রিকায় কিশোর রিপোর্টার হিসাবে সাংবাদিকতা শুরু।

এরপর সাতকানিয়া প্রতিনিধি হিসাবে দৈনিক জাগরণ ও বার্তাসংস্থা এমএনএ কাজ করি বেশ কিছু দিন।

এরপর জীবিকার তাগিদে স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে যোগদান করি চট্টগ্রামের একটি দৈনিক পত্রিকায়। কিন্তু শুরু থেকে ধাক্কা খেতে থাকি পত্রিকার সম্পাদকীয় নীতি ও নৈতিকতারু।

যার সাথে তাল মিলাতে না পারায় প্রায় মালিক পক্ষের অমানবিক, অসৌজন্যমূলক আচরণের মুখোমুখি হই। ফলে কয়েকমাস পর দে ছুট।

দায়বদ্ধতা থেকে ‘নান্দনিক সাতকানিয়া আন্দোলন’

নিজে কাজ করি কিন্তু মনে করি এদেশের প্রতিটি মানুষের, সমাজের প্রতি আমি দায়বদ্ধ। সে দায়বদ্ধতা থেকে সিটিজি টাইমস ডটকমের যাত্রা।

একজন সংবাদকর্মী হিসেবে মানুষের কাছে বস্তুষ্ঠি সংবাদ পৌছে দেওয়ার সেবাই ব্রত হই।

কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠি নয়, দেশের প্রতিটি নাগরিক আমার কাছে বড়। দল নয় দেশ এবং রাষ্ট্রই সর্বার্গ্রে।

ব্যক্তি, গোষ্ঠি, দলের যেই হোক একজন সুনাগরিকই দেশের বড় সম্পদ। এটাই আমার মূলনীতি ও নৈতিকতা।‘’

নান্দনিক সাতকানিয়া আন্দোলনের লক্ষ্য

”ইতিহাস-ঐতিহ্য আর গৌরবে পরিপূর্ণ’ সাতকানিয়াকে স্মার্ট এবং বাংলাদেশের অন্যতম নান্দনিক উপজেলা হিসেবে উপস্থাপনে বদ্ধপরিকর ”নান্দনিক সাতকানিয়া আন্দোলন”

  • নান্দনিক উপজেলার বাস্তবায়নে প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে নিরাপদ ব্যবসা বান্ধব এলাকা হিসাবে গড়ে তুলা।
  •  নাগরিক মতামতের ভিত্তিতে স্থানীয় পর্যায়ের সকল সমস্যা সমধানের জন্য এলাকায় ২৪ ঘণ্টার ‘সেবা সেল’ চালু করা
  •  নারি, শিশু ও বয়স্কদের জরুরি স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের লক্ষ্যে ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসা কেন্দ্রের আওতায় একটি ফোন কলেই স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার ব্যবস্থা করা।
  • টেলিমেডিসন সেবা সম্প্রসারণের মাধ্যমে উন্নত চিকিৎসা সেবা প্রাপ্তির নিশ্চয়তা দেওয়া।
  • সাতকানিয়া উপজেলার পার্ক ও খেলার মাঠ ব্যবহার উপযোগী করে সবুজ বেষ্টনী গড়ে তোলা। আধুনিক স্টেডিয়াম, শিশু পার্ক স্থাপন ও আধুনিক অডিটোরিয়াম নির্মাণ করা।
  • মাদক মুক্ত উপজেলার লক্ষ্যে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এনফোরস টিমকে সারক্ষনিক পেট্রোলিং-এ রাখায় ।
  • সাতকানিয়া উপজেলায় একটি হাইটেক পার্ক ও আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপন করা। যেখানে পর্যায়ক্রমে প্রায় ২০ হাজার দক্ষ তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থান হবে।
  • আন্তর্জাতিক মানের কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনসহ টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ স্থাপন করা।
  • শিক্ষার গুনগত মান বৃদ্ধি প্রকল্পে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি গণিত ক্যাম্প, বিজ্ঞান ও ইংরেজি ক্যাম্পের ব্যবস্থা করার পাশা-পাশি আইটি আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা ।
  • প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নারী-শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য পৃথক টয়লেট স্থাপন, ইভটিজিং, যৌতুকসহ নারী নির্যাতন ও বৈষম্যমূলক আচরণের বিরুদ্ধে সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় প্রতিরোধের মাধ্যমে নারীবান্ধব সাতকানিয়া উপজেলা গড়ে তোলা ।
  • কৃষককে বৈদ্যুতিক সেচ সংযোগের আওতায় আনা, কৃষি ভিত্তিক শিল্প স্থাপন ও উপজেলা হাসপাতালকে উন্নীত করা।
  • মানুষকে ভেজাল ও রাসায়নিক মুক্ত নিরাপদ খাদ্য পাবার নিশ্চয়তা দেয়া।
  • উপজেলার প্রাকৃতিক পরিবেশ ও জীব বৈচিত্র রক্ষায় যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা ।
  • ডলু নদী দ্রুত সংস্কার করে নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে এনে আধুনিক নৌ-যানের (ওয়াটার বাস সার্ভিস) ব্যবস্থা গড়ে তুলার পাশাপাশি নদীর দু’পাশ মনোরম পরিবেশে সাজানো।
  • দল, মত, জাতি, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে ক্ষুদ্র-বৃহৎ সকল জাতি গোষ্ঠির সংবিধান প্রদত্ত সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও ধর্মকর্মের অধিকার এবং জীবন, সম্ভ্রম ও সম্পদের পূর্ণ নিরাপত্তা বিধান করা ।
  • ”ইতিহাস-ঐতিহ্য আর গৌরবে পরিপূর্ণ’ সাতকানিয়ার ইতিহাস-ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে ঐক্যবদ্ধ সাতকানিয়ার জন্য কাজ করা।

ফেসবুকে মসরুর জুনাইদ – facebook.com

One comment

মতামত দিন