অনলাইনে ভ্রমণ কর জমা দেবার জন্য সোনালী ব্যাংক নয় আপনাকে যেতে হবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ওয়েবসাই এ
সড়কপথে ভ্রমণের জন্য ভ্রমণ কর (ট্রাভেল ট্যাক্স) পরিশোধ সবার জন্যই একটি কঠিন কাজ ছিলো। এর প্রধান কারণ হচ্ছে শুধুমাত্র নির্ধারিত সোনালী ব্যাংকেই ভ্রমণ কর জমা দিতে হতো।
ঢাকার মতো বড় শহরেই ভ্রমণ কর দিতে যেতে হতো সোনালী ব্যাংকের মতিঝিল বা নিউ মার্কেট শাখা।
বর্ডারে এমনিতেই ইমিগ্রেশনের বিশাল বড় লাইন থাকে, আগে থেকে না দেয়া থাকলে সেখানে ট্রাভেল ট্যাক্স জমা দিতে যেয়ে আরেক দফায় সময় নষ্ট হতো।
অনেকদিন থেকেই স্থলপথে যারা ভ্রমণ করে তাদের দাবী ছিলো ভ্রমণ কর দেবার বিয়ষটা অনলাইন করার জন্য। অবশেষে সে দাবী পূরণ হলো।
অনলাইনে ভ্রমণ কর পরিশোধ:
গত ২৫ জানুয়ারি ২০২০ জাতীয় রাজস্ব বোর্ড জানিয়েছিলো এখন থেকে অনলাইনে ভ্রমণ কর দেয়া যাবে, কিন্তু এ ব্যপারে বিস্তারিত জানানো হয়নি।
আসলে পুরো বিষয়টা অত্যন্ত সহজ। চলুন দেখে নেই কিভাবে অনলাইনে ভ্রমণ কর জমা দিবেন।
অনলাইনে ভ্রমণ কর জমা দেবার জন্য সোনালী ব্যাংক নয় আপনাকে যেতে হবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ওয়েবসাইটে www.nbr.gov.bd তে।
সেখানে হেডলাইনেই পাবেন ভ্রমণ কর পরিশোধের লিংক। না পেলে ই-সার্ভিস হেডিংয়ের নিচে সবগুলো ক্যাটাগরির মধ্যে “Travel Tax” অপশন দেখতে পাবেন।
সেখানে আপনাকে কয়েকটি তথ্য পূরণ করতে হবে।
এগুলো হচ্ছে আপনার নাম (পাসপোর্ট অনুসারে), পাসপোর্ট নাম্বার, যাত্রীর ধরণ ( প্রাপ্ত বয়স্ক ১৮ এর বেশি, শিশু ৫ বছর থেকে ১২ বছর পর্যন্ত), কোন ধরণের পরিবহনে যাচ্ছেন (সড়কপথ, জলপথ, আকাশপথ), গন্তব্য কোথায় (ভারত, নেপাল, ভুটান ও মিয়ানমার) এবং মোবাইল নাম্বার।
এগুলো পূরণ করলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার ভ্রমণ কর কতটাকা পরিশোধ করতে হবে সেটা দেখিয়ে দিবে।
প্রাপ্ত বয়স্কদের বর্তমান ভ্রমণ কর সড়কপথে ৫০০ টাকা, জলপথে ৮,০০ টাকা।
এছাড়া বিমান ও ট্রেনে সাধারণত টিকেটের সাথে একেবারে আদায় করা হয় বলে আলাদাভাবে ভ্রমণ কর দেয়ার প্রয়োজন পড়েনা।
অপ্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে যাদে বয়স ৫ থেকে ১২ বছরে মধ্যে তাদের জন্য ভ্রমণ কর অর্ধেক। আর ৫ বছরের কম বয়সী বাচ্চাদের জন্য কোন ভ্রমণ করে দিতে হয়না।
মসরুর জুনাইদ-এর ব্লগে আরও পড়ুন-
- ট্রেড লাইসেন্স করবেন কীভাবে, এ টু জেড জেনে নিন
- হোল্ডিং ট্যাক্স এবং হোল্ডিং নম্বর
- গাড়ির ফিটনেস নবায়ন অ্যাপয়েন্টমেন্ট এখন অনলাইনে
পরবর্তী পর্যায়ে গেলে আপনাকে আপনার দেয়া সব তথ্য দেখানো হবে।
একবার ভালোমতো যাচাই করে দেখবেন, কারণ কোন ভুল হলে সেটা আর সংশোধনের কোন উপায় থাকবেনা।
যদি ভুল দেখেন তবে ঠিক করার জন্য এডিট অপশনে ক্লিক করে ঠিক করে নেবেন।
এরপর প্রসিড টু পেমেন্ট অপশনে ক্লিক করলে পেমেট গেইটওয়েতে নিয়ে যাবে।
মনে রাখবেন পেমেন্ট গেইটওয়েতে সেখানে আপনি সোনালী ব্যাংক, কার্ড ও মোবাইল ওয়ালেট এ তিনটা অপশন পাবেন।
যার মধ্যে কার্ড ক্লিক করলে আপনার ডেভিট/ক্রেডিট কার্ড দিয়ে পরিশোধ করতে পারবেন অনলাইনে ভ্রমণ কর।
আর মোবাইল ওয়ালেটে এখন শুধুমাত্র বিকাশ অপশনটি আছে, তাই মোবাইল মানি দিয়ে করতে হলে বিকেশের মাধ্যমেই পেমেন্ট করতে হবে।
পুরো প্রক্রিয়া সফল হলে আপনার ই-চালান পেয়ে যাবেন।
সেটি প্রিন্ট করে সঙ্গে রাখতে পারেন। এছাড়া আপনার মোবাইলে যে এসএমএস আসবে সেটা দেখালেও চলবে। তবে আমার পরামর্শ থাকবে আপনি ই-চালানটি প্রিন্ট করে রাখবেন।
আর পুরো প্রক্রিয়াতে আপনার খরচ পড়বে ১০ টাকা বা তার চেয়ে কম।
মসরুর জুনাইদ-এর ব্লগে আরও পড়ুন-
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে বর্তমানে মাত্র তিনটি স্থলবন্দরের জন্য এখন ভ্রমণ কর অনলাইনে পরিশোধ করা যাবে।
এ তিনটি হচ্ছে বেনাপোল, দর্শনা ও ভোমরা স্থলবন্দর। প্রতিবার ভ্রমণের সময় ভ্রমণ কর দিতে হয়।
ভ্রমণ কর প্রদান করা গেলেও টার্মিনাল চার্জ এখনো (৪০ টাকা, বেনাপোল বন্দরের জন্য প্রযোজ্য) এখনো অনলাইনে দেয়া যাচ্ছেনা।
শীঘ্রই অন্য বন্দরগুলো সহ টার্মিনাল চার্জ দেয়া যাবে এই সাইটের মাধ্যমেই। সুত্র- ভ্রমণগুরু