সাংবাদিকতা ও মানসিক চাপ (ট্রমার শিকার) নিয়ে বিশ্বে যেসব প্রতিষ্ঠান কাজ করে, তাদের মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে দ্য ডার্ট সেন্টার।
সাংবাদিকদের যেসব ঝুঁকি মোকাবিলা করতে হতো, বৈশ্বিক করোনা ভাইরাস মহামারির সময়েও তা প্রযোজ্য।
কিন্তু সুনামি বা বোমা বিস্ফোরণের মতো ঘটনার সঙ্গে এখনকার পরিস্থিতির কিছু অমিল আছে।
সংকট, ট্র্যাজেডি ও দুর্যোগের সময় সংবাদ সংগ্রহ, অথবা ভুক্তভোগীর সাক্ষাৎকার নিতে গিয়ে সাংবাদিকদের দু’টি জটিল বিষয় মাথায় রাখতে হয়: খবর যেন ভুক্তভোগীদের আরো ক্ষতির কারণ না হয়, এবং নিজের মানসিক স্বাস্থ্য।
সাংবাদিকতা ও মানসিক চাপ (ট্রমার শিকার) নিয়ে বিশ্বে যেসব প্রতিষ্ঠান কাজ করে, তাদের মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে দ্য ডার্ট সেন্টার।
তাদের এশিয়া–প্যাসিফিক কার্যালয়ের পরিচালক কেইট ম্যাকমাহন একাদশ গ্লোবাল ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম কনফারেন্সে আলোচনা করেছিলেন – খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে সাংবাদিকরা কিভাবে ট্রমার শিকার হন, এবং সেখান থেকে কিভাবে বেরিয়ে আসতে হয়।
তিনি এবার জানালে করোনাভাইরাস মহামারিতে তাদের ট্রমা গাইডলাইন কিভাবে কাজে আসবে।
প্রাকৃতিক বিপর্যয় বা সংঘাতে মনোবিজ্ঞানীদের মতো একজন সাংবাদিককেও প্রায়ই প্রত্যক্ষদর্শীর ভূমিকা নিতে হয়।
দেখতে হয় বিভীষিকা, রাগ, ক্ষোভ, আর হতাশা।
এই অনূভূতি একজন ভুক্তভোগীর চেয়ে খুব একটা আলাদা নয়, বলেন ম্যাকমাহন।
এমন ঘটনায় একজন আক্রান্ত মানুষের অভিজ্ঞতা বা গল্প, পাঠকের কাছে পৌঁছায় সাংবাদিকের মাধ্যমে।
এই কাজ করতে গিয়ে রিপোর্টার তিনটি ভিন্ন ভিন্ন ধাপে মানসিক চাপের সম্মুখিন হন। প্রথমত: সেই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে।
মসরুর জুনাইদ-এর ব্লগে আরও পড়ুন-
- সাংবাদিকতা নয়, পাবলিক রিলেশনস
- ভাল রেডিও উপস্থাপনার চাবিকাঠি
- ‘ইয়োলো জার্নালিজম’ বাংলায় হলুদ সাংবাদিকতা নামে পরিচিত
দ্বিতীয়ত: ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলা ও তাদের প্রতি সহমর্মিতা দেখানোর সময়। এবং তৃতীয়ত: পাঠকের জন্য তাদের গল্পগুলো ফের বলতে গিয়ে।
আগে সাংবাদিকদের যেসব ঝুঁকি মোকাবিলা করতে হতো, বৈশ্বিক করোনা ভাইরাস মহামারির সময়েও তা প্রযোজ্য।
কিন্তু সুনামি বা বোমা বিস্ফোরণের মতো ঘটনার সঙ্গে এখনকার পরিস্থিতির কিছু অমিল আছে।
ম্যাকমাহন বলেছেন, “আমরা একটা অদ্ভূত, অদৃশ্য জিনিসের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে… ভালো হোক বা মন্দ, আমরা সবাই তার মধ্যেই আছি, এবং একসাথে।”
“আগে রিপোর্ট করেছেন অন্য কারো জীবনে কী ঘটলো সেই অভিজ্ঞতা নিয়ে, তার সাথে আপনার অভিজ্ঞতার মিল থাকুক বা না থাকুক,” তিনি বলেন।
“কিন্তু এবার সবাইকে একই অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে, এবং আমরা সবাই কমবেশি স্টোরির অংশ হয়ে গিয়েছি।
এর মানে, সাংবাদিকদের এখন – নিজের এবং যাদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হচ্ছে – দুই দিকেরই মানসিক অশান্তির দিকে খেয়াল রাখতে হবে।”
ব্রুস শাপিরো এবং ম্যাকমাহন এখানে বলেছেন, করোনা (কোভিড–১৯) সহ ট্রমা জন্ম দিতে পারে এমন ঘটনা কাভারের সময়, তার আগে, বা পরে – কী ধরণের কৌশল নিলে সাংবাদিকরা মানসিক চাপ সামাল দিতে পারবেন।
রিপোর্টিং শুরুর প্রস্তুতি
কোনো প্রতিবেদনের মধ্যে ডুবে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন না। কারণ ততক্ষণে আপনি আবেগাক্রান্ত, অবসন্ন ও হতবিহ্বল হয়ে পড়বেন। আগে থেকেই একটি পরিকল্পনা তৈরি করুন, যেটি আপনি কাজ শুরু করার পর অনুসরণ করবেন।
ম্যারাথনের মত দীর্ঘ অনুসন্ধানের পরিকল্পনা
- রিপোর্টিংয়ের সময়সূচি ঠিক করে নিন। কখন আপনার কঠিন কাজগুলো করবেন, সেই সিদ্ধান্ত নিন। যেমন, সকালের দিকে হয়তো আপনার কর্মস্পৃহা বেশি থাকতে পারে।
- বিরতি নিন।
- যে জায়গাগুলো নিয়ে অনেক গভীর দৃষ্টি দিতে হবে বা বিস্তারিত সাক্ষাৎকার নিতে হবে, সেগুলোর সময় ঠিক করে নিন।
সম্ভব হলে, বেশি আবেগঘন কাজগুলো যত শুরুতে সম্ভব সেরে ফেলুন। কারণ এসময়েই আপনার ক্লান্তি কম থাকবে।
ঘুমোতে যাওয়ার আগে মানসিক চাপ তৈরি করবে, এমন বিষয়গুলো নিয়ে ভাববেন না। - নিয়মিত ঘুম ও বিশ্রামের একটি পরিকল্পনা করে রাখুন। যেমন সাঁতার কাটা, যোগব্যয়াম করা বা বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে যোগাযোগ করা।
- নিজের সীমাবদ্ধতা ও মানসিক চাপজনিত দুর্বলতার জায়গাগুলো জানুন।
- মানসিক আঘাতজনিত কোনো অ্যাসাইনমেন্ট শুরুর আগে নিজের মানসিক অবস্থাকেও মূল্যায়ন করুন। ঠিক যতটা আপনি করেন শারিরীক ঝুঁকির ক্ষেত্রে। এবং এটিকে নিয়ম বানিয়ে ফেলুন।
- পরিস্থিতি অনুযায়ী নিজের সময়সূচি হালনাগাদ করে নিন, যেন ডেডলাইন মিস না করেন। কারণ এটি আরো বাড়তি চাপ তৈরি করবে।
“মানসিক চাপ সামলে ওঠার জন্য মস্তিস্কের কিছু সময় দরকার হয়। নইলে হতবিহ্বল হয়ে পড়তে হয়”, বলেছেন শাপিরো। “
এখন থেকেই পরিকল্পনা করা জরুরি। যেমন কিভাবে আপনার প্রাত্যহিক দিনগুলোতে ইতিবাচক কর্মকাণ্ড যুক্ত করা যায়।”
আপনি কিসে প্রভাবিত হন, তা জানুন-বুঝুন। আপনাকে সেসব বিষয়ের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে, যেগুলো আপনার সেসব স্মৃতি জাগিয়ে তুলতে পারে এবং আপনাকে আবেগাক্রান্ত করতে পারে।
মানসিক স্বাস্থ্যের ব্যাপারে নিয়মিত স্ব–মূল্যায়ন করুন।
ম্যাকমাহন বলেছেন, আগে থেকেই কোনো মানসিক চাপে থাকলে, আপনার ঝুঁকি আরো বেশি।
শুধু সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতাই নয়, দীর্ঘমেয়াদী মানসিক আঘাতগুলোর কথাও বিবেচনায় নিতে হবে।
নাটকীয় ঘটনা, প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধরে চলা সংঘাত এবং ব্যক্তিগত মানসিক আঘাত (যেগুলো আপনার নিজের জীবনে এবং কাছের মানুষদের জীবনে প্রভাব ফেলেছে); অতীতের এমন ঘটনা আপনার বর্তমানকে প্রভাবিত করতে পারে।
কোনো সাক্ষাৎকার নেওয়ার সময়, আপনি হয়তো সেই ভিকটিমের মানসিক আঘাতটি অনেক যথার্থভাবে উপলব্ধি করতে পারবেন।
এখান থেকে আপনার পুরোনো মানসিক আঘাতের স্মৃতিগুলো আবার জেগে উঠতে পারে। নিয়ে আসতে পারে বিষন্নতা, উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার অনুভূতি।
আপনি কিসে প্রভাবিত হন, তা জানুন–বুঝুন। আপনাকে সেসব বিষয়ের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে, যেগুলো আপনার সেসব স্মৃতি জাগিয়ে তুলতে পারে এবং আপনাকে আবেগাক্রান্ত করতে পারে।
ম্যাকমাহন এখানে একটি চেকলিস্ট ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন। গুরুত্বপূর্ণ কোনো সাক্ষাৎকারের পরিকল্পনা করার আগে আপনার নিজেকে কোন প্রশ্নগুলো করতে হবে?
মানসিক চাপের ঝুঁকি যাচাই চেকলিস্ট
করোনাভাইরাসের কারণে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে গিয়ে ব্যক্তিজীবনেও প্রভাব পড়ছে অনেক সাংবাদিকের।
এমন কারণে যারা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত অবস্থায় আছেন, তাদের উচিৎ নিজের ট্রমার শিকার হওয়ার ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন থাকা, এবং সামাজিক সংযোগ ও সহযোগিতা চাওয়া।
সামাজিক দুরত্বের মধ্যে রিপোর্টারদের সহনশীলতা
- আপনার প্রতিদিনের কাজের কাঠামো ও সীমার দিকে বাড়তি নজর দিন।
- ইতিবাচকভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলার সুযোগগুলো খুঁজে নিন। যেমন হাস্যরস বা সামাজিক সংহতি।
- নিজের মিশন পরীক্ষা করুন: লক্ষ্য–উদ্দেশ্য ও নৈতিকতা সম্পর্কে পরিস্কার ধারণা থাকলে সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হয় এবং
- প্রতিদিন যা করছেন, তা–ও ভালো লাগতে শুরু করে।
- অর্জন করা সম্ভব, এমন লক্ষ্য স্থির করুন। ব্যক্তিগত ও পেশাগত, দুই ক্ষেত্রেই।
শারীরিকভাবে প্রস্তুতি নেওয়াটাও কোভিড–১৯ কাভারের ক্ষেত্রে খুবই জরুরি। যেমন মাস্ক, গ্লাভস ও স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা করা।
ম্যাকমাহন মনে করিয়ে দিয়েছেন, আগের কোনো মানসিক আঘাতের কারণে হয়তো কিছু সাংবাদিক এসব প্রটেকটিভ ইকুইপমেন্ট পরতে অস্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন। সেক্ষেত্রে তাদের উচিৎ বার্তাকক্ষ ব্যবস্থাপকদের সঙ্গে কথা বলা।
ট্রমা নিয়ে রিপোর্ট করার সময়
করোনা (কোভিড-১৯) এর ক্ষেত্রে, আপনার ও সাক্ষাৎকারদাতার সুরক্ষার কথা ভেবে, আপনাকে হয়তো মুখোমুখি সাক্ষাৎকার নেওয়ার পরিমাণ কমিয়ে ফেলতে হতে পারে।
এক্ষেত্রে শারিরীক দুরত্বের ঘাটতি কমিয়ে আনার জন্য বেশি করে আই কনট্যাক্টের পরামর্শ দিয়েছেন ম্যাকমাহন। যদিও ভার্চুয়াল রিপোর্টিংও ট্রমা তৈরি করতে পারে।
মানসিক চাপের সঙ্গে শারিরীক অবস্থারও সম্পর্ক আছে। এমন পরিস্থিতিতে আপনার কী ধরনের শারিরীক ক্রিয়া–প্রতিক্রিয়া হয়, সেগুলো বুঝতে চেষ্টা করুন।
ম্যাকমাহন বলছেন, সাংবাদিকরা এই নিয়মনীতির বাইরে নন। তিনি সাংবাদিকদের পরামর্শ দিয়েছেন নিজেদের ক্রিয়া–প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জানতে–বুঝতে এবং সে অনুযায়ী আগে থেকেই প্রস্তুত থাকতে।
মানসিক আঘাতের শারীরিক প্রতিক্রিয়া
- বিপদে পড়লে মানুষের শরীর যেমন প্রতিক্রয়া দেখায়, এখানেও ঠিক তেমনই। এমন পরিস্থিতিতে আপনার শরীর অ্যালার্টের অবস্থায় চলে যায়, সুরক্ষা ব্যবস্থাগুলো সক্রিয় হয় এবং এটি আপনার মস্তিস্কে রাসায়নিক প্রভাব ফেলে।
- এসময় আপনি যন্ত্রণা, বেদনা অনুভব করবেন – এটাই স্বাভাবিক।
- শারীরিক ও মানসিক; আপনার প্রতিক্রিয়া হবে দুই ক্ষেত্রেই।
আপনার হার্টবিট যদি বেড়ে যায়, ঘাম হতে থাকে, কান্না শুরু করেন বা শারিরীক যন্ত্রণা শুরু হয়, তাহলে নিজের সুরক্ষার জন্য আরো পদক্ষেপ নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন মনোবিদরা।
মানসিক স্ব-সুরক্ষার ব্যবস্থা
- একটু থামুন, শ্বাস নিন।
- কিছু সময় কাজ বন্ধ রাখুন। সম্ভব হলে, ঘরের বাইরে যান, অল্প সময়ের জন্য হলেও। লাফালাফি বা দৌড়াদৌড়ি করুন। এই চলাফেরা, অবস্থার পরিবর্তন আপনাকে সাহায্য করবে আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে।
- যদি ঘর থেকে বেরুতে না পারেন, তাহলে শরীরের অবস্থান পরিবর্তন করুন। যতটা আরাম করে বসা সম্ভব, বসুন। আর মেরুদণ্ডটা সোজা রাখবেন। নিজের শরীরকে অনুভব করুন। মানসিক পীড়ার সময়গুলোতে, আমরা নিজের অজান্তে পা ভাঁজ করে ফেলি বা হাত মোচড়াতে থাকি। এক্ষেত্রে পা ছড়িয়ে দিন এবং মাংসপেশী শিথিল করুন।
- মেঝেতে বসে পড়ুন। পা ছড়িয়ে দিন। দুই পা মাটিতে এমনভাবে রাখুন যেন মাটির স্পর্শ অনুভব করতে পারেন।
- শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়াম করুন। তিন গুনতে গুনতে শ্বাস নিন। শ্বাস ধরে রাখুন পাঁচ গোনা পর্যন্ত। এরপর আট পর্যন্ত গুনে নিঃশ্বাস ছাড়ুন।
এই অভূতপূর্ণ পরিস্থিতিতে সাংবাদিকরা অনেক অপ্রত্যাশিত আচরণ দেখতে পারেন। এজন্য তাদের প্রস্তুত থাকা দরকার।
ম্যাকমাহন বলেছেন, “মানুষের উদ্বেগ–উৎকণ্ঠার প্রকাশ পাচ্ছে নানাভাবে। অন্য মানুষ কিভাবে আক্রান্ত বোধ করেন এটা হয়তো আপনি জানছেন না।
শোক করতে থাকা কোনো মায়ের সাক্ষাৎকার নিতে যাওয়ার সময়, আপনি হয়ত সতর্ক থাকবেন, কিসে তার মানসিক আঘাতের স্মৃতি ফিরে আসে।
কারণ এটি একটি নিয়ন্ত্রিত পরিস্থিতি। কিন্তু এখন আমরা যা দেখছি, তা একেবারেই নতুন।”
আবেগাক্রান্ত প্রতিবেদনগুলো শেষ হওয়ার পর স্বাভাবিক হওয়া
জটিল কোনো প্রতিবেদন নিয়ে রিপোর্টিং শেষ করার পর, নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন: আপনার এই ধরণের কোনো মানসিক চাপের লক্ষণ আছে কিনা:
- দুশ্চিন্তা
- সংশয়
- বিচ্ছিন্নতা বোধ
- লজ্জা
- অপরাধবোধ
- নিষ্ক্রিয়তা
- হতাশা
- নিজেকে দোষারোপ করা
- হতোদ্যম হয়ে পড়া
- বিশ্বাসঘাতকতার বোধ
মনে রাখুন: ইন–ডেপথ প্রতিবেদনগুলো হয় ম্যারাথনের মতো, ১০০ বা ২০০ মিটার দৌড়ের মতো না, বলেছেন ম্যাকমাহন। সাংবাদিকদের সেই অনুযায়ী দৌঁড়াতে হবে।
কর্মপরিকল্পনা ও কাজের ধরণে পরিবর্তন আনতে হবে এবং হাসি–আনন্দের উপলক্ষ্য খুঁজে নিতে হবে।
মসরুর জুনাইদ-এর ব্লগে আরও পড়ুন-
- করোনা: মাঠে থাকা সাংবাদিকরা কতটুকু নিরাপদ?
- সাংবাদিকতার ভবিষ্যৎ অনলাইনে
- কমিউনিটি রেডিও: প্রান্তিক এলাকার কণ্ঠহীনদের কণ্ঠস্বর
ডার্ট সেন্টারের পরামর্শ অনুযায়ী, মানসিক আঘাতজনিত কোনো প্রতিবেদন নিয়ে কাজ করার পর যেসব পদ্ধতি কাজে লাগতে পারে, তার মধ্যে আছে ধ্যান, মনোবিদের সঙ্গে সেশন বা ব্যায়াম।
মানসিক চাপ সামলাবেন কিভাবে
- সাক্ষাৎকারগুলো সঙ্গে সঙ্গেই লিখে ফেলার জন্য তাড়াহুড়ো করবেন না। সম্ভব হলে, মানসিক চাপের মধ্যে পড়তে হবে, এমন জিনিসগুলো একটু সরিয়ে রাখুন।
- প্রতিবেদনের দৃষ্টিকোণ পরিবর্তন করুন। পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে সহনশীল ও সৃজনশীল কৌশলগুলোর কথা তুলে আনুন। যথার্থ প্রেক্ষিত তুলে আনুন, যেখানে মৃত্যুহারও থাকবে আবার সুস্থ হয়ে ওঠা মানুষদের সংখ্যাও থাকবে।
- বিশ্রাম নিন। খেলাধুলা, ধ্যান, পোষাপ্রাণীর সঙ্গে সময় কাটানো বা কোনো বন্ধু–সহকর্মীর সঙ্গে খেতে যাওয়া – এসবের জন্যেও সময় আলাদা করে রাখুন।
- সহকর্মীদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপ করুন। সামাজিক সহযোগিতা খুব গুরুত্বপূর্ণ। একে–অপরকে সহায়তা করুন। নিউজরুমে এমন কাউকে খুঁজে নিন যার সাথে সব অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে পারেন এবং সমাধান চাইতে পারেন।
- জটিল কোনো প্রতিবেদন নিয়ে কাজ করছে, এমন সহকর্মীকে সাহায্য–সমর্থন দিন।
- ভাবুন: কিভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করবেন, কেন এটি আপনার ওপর প্রভাব ফেলছে এবং তা কাটিয়ে উঠতে কী করতে পারেন।
“কী ধরণের মানসিক চাপে ভুগছেন, তা বুঝতে পারাটা খুব জরুরি,” বলেছেন শাপিরো, “চাপটি যদি নির্মম ও দীর্ঘমেয়াদী হয়, তাহলে আপনি ঠিকঠাক কাজ করতে পারবেন না। আরো চাপের মুখে পড়ে যাবেন।
ফলে শরীর ও মন থেকে চাপ ঝেড়ে ফেলতে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।”
“সাংবাদিকরা সহনশীল। কিন্তু আমরাও মানুষ। তাই মস্তিস্ককে সময় দিন চাপ কাটিয়ে ওঠার জন্য,” এমনটাই বলেছেন শাপিরো।