মৌলিক সৃষ্টিকর্মের মালিকানা বা স্বত্বাধিকার নিশ্চিত করাই হচ্ছে ‘ কপিরাইট নিবন্ধন ‘। কেউ যদি কপিরাইট ভঙ্গ করে নকল করেন, তবে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি প্রতিকার পেতে সুবিধা হয়।
কপিরাইট হচ্ছে মেধার মালিকানা। যেকোনো সৃজনশীল ও মৌলিক কাজের ওপর প্রণেতার একচ্ছত্র যে অধিকার জন্মে তা-ই হচ্ছে কপিরাইট।
কপিরাইট লঙ্ঘনের ফলে মেধাস্বত্ত্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন লেখক বা উদ্ভাবকরা।
তবে লেখক বা উদ্ভাবকরা চাইলে তাদের সৃষ্টকর্মগুলোকে কপিরাইটের আওতায় নিয়ে আসতে পারেন।
কপিরাইট যে শুধু কোনো বইয়ের ওপরই হয় তা কিন্তু নয়। বই ছাড়া আরও কয়েকটি ক্ষেত্র রয়েছে যেখানে কপিরাইট দাবি করা যায়।
যেমন চলচ্চিত্র, সংগীত কিংবা নাটক, সফটওয়্যার, ওয়েবসাইট, মোবাইল অ্যাপস প্রভৃতি।
মসরুর জুনাইদ-এর ব্লগে আরও পড়ুন-
- ই–পাসপোর্ট সহজে যেভাবে পাবেন
- অনলাইনে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করবেন যেভাবে
- অনলাইনে নিলাম আবেদন চট্টগ্রাম কাস্টমসে, ঘরে বসে অংশ নিন
কপিরাইট সুরক্ষার জন্য লেখক বা প্রণেতার উচিত তাঁর সৃষ্টকর্মটির নিবন্ধন করিয়ে নেওয়া।
কেউ যদি কপিরাইট ভঙ্গ করে নকল করেন, তবে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি প্রতিকার পেতে সুবিধা হয়।
কোনো সৃষ্টিকর্মের কপিরাইট নিবন্ধন-এর জন্য আবেদন করতে হলে ঢাকার শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত কপিরাইট কার্যালয় থেকে নির্ধারিত আবেদনপত্র সংগ্রহ করতে হবে।
কপিরাইট নিবন্ধন করার নিয়মকানুন
যেকোনো সৃজনশীল ও মৌলিক কাজ; যেমন সফটওয়ার, ওয়েবসাইট, মোবাইল অ্যাপস, সাহিত্য, শিল্প, নাটক, সংগীত, চলচ্চিত্র প্রভৃতি বিষয়ে কপিরাইট নিবন্ধন করা যায়।
কপিরাইট নিবন্ধন করলে সুবিধা : যেকোনো সৃজনশীল ও মৌলিক কাজের ওপর প্রণেতার একচ্ছত্র যে অধিকার জন্মে; তা-ই হচ্ছে কপিরাইট।
কেউ যদি কপিরাইট ভঙ্গ করে নকল করেন, তবে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি প্রতিকার পেতে সুবিধা হয়।
আইনগত জটিলতায় মালিকানার প্রমাণপত্র হিসেবে আদালতে কপিরাইট সনদ ব্যবহার করা যায়।
এবার আসুন জেনে নেওয়া যাক কপিরাইট কিসে হয় এবং নিবন্ধন করার নিয়মকানুন।
সফটওয়ার কর্মের নিবন্ধন প্রক্রিয়া : প্রকাশিত ও অপ্রকাশিত উভয় ধরনের সফটওয়ার কর্ম কপিরাইট নিবন্ধন করা যায়।
কপিরাইট আইন, ২০০০ এর ২৮(ক) ধারার বিধানমতে সফটওয়ারকর্মের কপিরাইট এর মেয়াদ যে বছর কর্মটি প্রথম প্রকাশিত হবে তার পরবর্তী পঞ্জিকাবর্ষের শুরু থেকে ৬০ (ষাট) বছর পর্যন্ত।
সফটওয়ার প্রণেতা কর্তৃক নিবন্ধনের ক্ষেত্রে যে সকল কাগজপত্র দাখিল করতে হবে-
- নির্ধারিত ফরমে আবেদনপত্র ০৩ (তিন) কপি।
- সফটওয়্যার কর্ম সিডি আকারে ০২ (দুই) কপি ও প্রিন্ট আকারে ০২ (দুই) কপি।
- বাংলাদেশ ব্যাংক/সোনালী ব্যাংকের যেকোন শাখায় কৃত ১-৩৪৩৭-০০০০-১৮৪১ কোড নম্বরে ১০০০/- (এক হাজার) টাকা ট্রেজারি চালান করে তার মূল কপি এবং একটি ফটোকপি।
- কর্মটি মৌলিক মর্মে আদালতে কোন মোকদ্দমা বিচারাধীন নেই এবং প্রদত্ত তথ্য নির্ভুল ঘোষণা সংবলিত ৩০০/- (তিনশত) টাকার ননজুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে অঙ্গীকারনামা।
- বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র/পাসপোর্টের সত্যায়িত ফটোকপি।
- পাসপোর্ট সাইজের দুই কপি সত্যায়িত ছবি।
প্রতিষ্ঠানের নামে নিবন্ধনের জন্য যে সকল কাগজপত্র দাখিল করতে হবে-
- প্রতিষ্ঠানের নামে কপিরাইট নিবন্ধনের জন্য ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য সকল কাগজপত্রের সাথে কোম্পানির মেমোরেন্ডাম, ট্রেড লাইসেন্স, টিআইএন সার্টিফিকেট এর সত্যায়িত ফটোকপি।
- নিয়োগকর্তা হিসাবে প্রতিষ্ঠান স্বত্বাধিকারী হলে সৃজনকারীকে প্রতিষ্ঠান প্রদত্ত নিয়োগপত্রের সত্যায়িত ফটোকপি।
- হস্তান্তর সূত্রে মালিক হলে ৩০০/- (তিনশত) টাকার ননজুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে কপিরাইট হস্তান্তর দলিল।
কপিরাইট প্রাপ্তির ক্ষেত্রে অপেক্ষাকাল : কপিরাইট বিধিমালা-২০০৬ এর ৪(৪) বিধি মোতাবেক কপিরাইট রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত যেকোন কর্মের বিষয়ে আবেদনপ্রাপ্তির পর বর্ণিত কর্মের বিষয়ে আপত্তির সুযোগ প্রদানের জন্য ৩০(ত্রিশ) দিন অপেক্ষা করতে হবে।
কপিরাইট লঙ্ঘন হলে প্রতিকার : কপিরাইট আইন, ২০০০ এর ৮১ ধারার বিধানমতে, কপিরাইট লঙ্ঘনজনিত অপরাধ দেওয়ানী আদালতে বিচার্য এবং এধরনের মামলা এখতিয়ারাধীন জেলা জজ আদালতে দায়ের করতে হবে।
সফটওয়ার কর্মের কপিরাইট লঙ্ঘনের শাস্তি : কপিরাইট আইন, ২০০০ এর ৮৪(ক) ধারার বিধানমতে সফটওয়ার কর্মের কপিরাইট লঙ্ঘনের শাস্তি অনূর্ধ্ব ০৪ (চার) বছর কিন্তু অন্যূন ০৬ (ছয়) মাস কারাদন্ড এবং অনূর্ধ্ব চার লক্ষ টাকা কিন্তু অন্যূন এক লক্ষ টাকা অর্থদন্ড এবং লঙ্ঘিত কপি ব্যবহারের শাস্তি অনূর্ধ্ব ০৩ (তিন) বছর কিন্তু অন্যূন ০৬ (ছয়) মাস মেয়াদের কারাদন্ড অথবা অনূর্ধ্ব ০৩ (তিন) লক্ষ টাকা কিন্তু অন্যূন ০১ (এক) লক্ষ টাকার অর্থদন্ড [ধারা ৮৪(খ)]।
কপিরাইট লঙ্ঘন রোধে পুলিশের ক্ষমতা : উক্ত আইনের ৯৩ ধারা বিধানমতে গ্রেফতারি পরোয়ানা ছাড়াই সাবইন্সপেক্টর বা তাঁর উপরের পদমর্যাদার কর্মকর্তা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা হিসেবে পাইরেটেড দ্রব্য কিংবা নকল করার সামগ্রী জব্দ করতে পারবেন।
শিল্পকর্ম: শিল্পকর্মের বেলায় প্রকাশিত ও অপ্রকাশিত উভয় ক্ষেত্রে কপিরাইট নিবন্ধন করা যায়। শিল্পীর জীবনকাল ও তাঁর মৃত্যুর পর ৬০ বছর পর্যন্ত শিল্পকর্মটির কপিরাইট তাঁর থাকবে।
শিল্পকর্ম ও সফটওয়্যারের ক্ষেত্রে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া একই রকম এবং একই ধরনের দলিলাদি জমা দিতে হবে। ফিও একই রকম।
তবে আবেদনের সঙ্গে অবশ্যই তিন কপি শিল্পকর্ম শক্ত কাগজে পেস্ট করে দিতে হবে।
সাহিত্যকর্ম: পাণ্ডুলিপি ও বই—এ দুয়ের জন্যই কপিরাইট নিবন্ধন করা যায়। লেখকের জীবনকাল ও মৃত্যুর পর থেকে ৬০ বছর পর্যন্ত কপিরাইট বহাল থাকে। সাহিত্যের ক্ষেত্রে নিবন্ধনের নিয়ম একই রকম। তবে দুই কপি পাণ্ডুলিপি বা বই জমা দিতে হবে।
বইয়ের ক্ষেত্রে লেখক ও প্রকাশকের মধ্যে আলাদা চুক্তি করে তা নিবন্ধন করে নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। ৮০০ টাকা ফি জমা দিয়ে নির্ধারিত নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে চুক্তি সম্পাদন করে নিতে হবে।
এ চুক্তির মধ্যে স্বত্ব নিয়োগের অধিকার, রয়্যালটির পরিমাণসহ যাবতীয় শর্তাবলি উল্লেখ করে নিতে হবে। এর মাধ্যমে প্রকাশক অর্থনৈতিক অধিকার এবং লেখকের নৈতিক অধিকারসহ প্রাপ্য পাওনা দাবি করার সুযোগ পাকাপোক্ত হবে।
পাণ্ডুলিপি বা বইয়ের স্বত্ব পেতে লেখকের করণীয়
বই নকল বন্ধে অনেক চেষ্টা করেও কূলকিনারা করতে পারছেন না প্রকাশকরা। বই বের হওয়ার পর পরই নকল হওয়ার পাশাপাশি, স্বত্ব নিবন্ধন না করে অন্য প্রকাশকদের কাছে পাণ্ডুলিপি বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে।
বই নকল বন্ধে প্রকাশকদের পাশাপাশি লেখকদেরও কিছু কর্তব্য রয়েছে। প্রকাশকের কাছে পাণ্ডুলিপি বিক্রির আগে লেখকদের উচিত পাণ্ডুলিপিটি নিবন্ধন করা।
কেননা, লেখকদের পাণ্ডুলিপির নিবন্ধন না থাকায় বই নকলের ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নিতে পারেন না প্রকাশক। তাই নকল রোধে লেখকদের বইটিকে স্বত্ব নিবন্ধন করে নেওয়া উচিত আগেভাগেই।
সংগীত: সংগীতের গীতিকার ও সুরকার হচ্ছে আইনত প্রণেতা ও কপিরাইটের মালিক। কণ্ঠশিল্পী, প্রযোজক ও ব্রডকাস্টিং অরগাইনেজেশন হচ্ছে রিলেটেড রাইটসের অধিকারী।
তবে কপিরাইট ও রিলেটেড রাইটস মূলত একই অধিকার বহন করে। সংগীত প্রকাশিত ও অপ্রকাশিত দুই ক্ষেত্রেই নিবন্ধন করা যায়।
গীতিকার ও সুরকারের কপিরাইট হচ্ছে জীবনকাল ও মৃত্যুর পর ৬০ বছর। কণ্ঠশিল্পীর ক্ষেত্রে মেয়াদ ৫০ বছর। আর প্রযোজকের ক্ষেত্রে ৬০ বছর ও ব্রডকাস্টিং অরগানাইজেশনের বেলায় ২৫ বছর পর্যন্ত কপিরাইটের মেয়াদ থাকে।
কপিরাইট নিবন্ধনের জন্য আবেদনের নিয়মকানুন একই রকম।
নাটক ও চলচ্চিত্র: নাটকের প্রণেতা হলেন নাট্যকার কিংবা গ্রন্থকার। তিনি জীবদ্দশায় ও মৃত্যুর পর ৬০ বছর পর্যন্ত কপিরাইটের মালিক। নিবন্ধন আবেদনের প্রক্রিয়া একই রকম।
চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে প্রণেতা হলেন চলচ্চিত্রের প্রযোজক। তিনি কপিরাইটের অধিকারী। যে বছর চলচ্চিত্রটি প্রথম প্রকাশিত হবে তার পরবর্তী পঞ্জিকাবর্ষের শুরু থেকে ৬০ বছর পর্যন্ত মালিকানা বহাল থাকে।
চলচ্চিত্রের কপিরাইটের আবেদনের প্রক্রিয়া অন্যান্য কর্মের আবেদনের মতোই। তবে চলচ্চিত্রের সেন্সর ছাড়পত্র জমা দিতে হবে এবং চলচ্চিত্রটি সিডি আকারে দুই কপি জমা দিতে হবে।
এ ছাড়া যেকোনো রেকর্ড-কর্মের জন্যও কপিরাইট নিবন্ধন করানো যায়।
‘কপিরাইট নিবন্ধন’ আগে আসলে আগে পাবেন!
আপনি সফটওয়্যার বানিয়েছেন, বই লিখেছেন কিংবা লিখেছেন গান। কিন্তু সেই সৃষ্টকর্মটি কপিরাইট আপনি নিয়ে রাখেননি।
পরে আপনার লেখা গান কিংবা বইয়ের লেখার যদি অন্য কেউ কপিরাইট চেয়ে বসে তবে তিনিই সেটা পেয়ে যাবেন!
আপনি মালিক হলেও নিজের কাজের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে তখন আপনাকে যেতে হবে আইনি লড়াইয়ে। আর এসবই ঘটছে দেশে কপিরাইট নিবন্ধন এর ক্ষেত্রে।
কর্তৃপক্ষ বলছেন, কপিরাইট অফিসে ইতোমধ্যে নিবন্ধিত হয়নি এমন যেকোনও কিছুর কপিরাইট যদি কোনও ব্যক্তি চায় তাহলে নিয়ম ও পদ্ধতি মেনে তাকে দিয়ে দেওয়া হবে। ফার্স্ট কাম ফার্স্টস সার্ভ।
বিষয়টি যাচাই-বাছাই না করেই ‘আগে আসলে আগে পাবেন’ ধরনের হয়ে যাচ্ছে কিনা প্রশ্নে কপিরাইট অফিস বলছে, শঙ্কা তো আছেই।
কেননা, কেবল কপিরাইট নিবন্ধন করতে আগ্রহী ব্যক্তির অঙ্গীকারনামাকে বিশ্বাস করেই পুরো কাজটি করা হয়।
নিবন্ধন চাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট কোনও পক্ষ আপত্তি জানাচ্ছে কিনা তা দেখতে মাত্র ৩০ দিন অপেক্ষা করা হয়।
বাংলাদেশের কপিরাইট আইন
বাংলাদেশে কপিরাইট নিবন্ধন আইন প্রথম তৈরি হয় ১৯৭৪ সালে। কিন্তু এরপর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অনেক পরিবর্তন হয়েছে।
সিডি, মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট ইত্যাদির কারণে সৃষ্টিশীলতা ও কপিরাইট ধারণারও বদল হয়েছে।
পরবর্তীতে ২০০০ সালে নতুন একটি কপিরাইট আইন করা হয়, যা পরে ২০০৫ সালে সংশোধন হয়।
বাংলাদেশের রেজিস্টার অফ কপিরাইটস জাফর আর চৌধুরী বলছেন, এই আইনে প্রতিকার পেতে হলে তাকে মেধা সম্পদটির অবশ্যই রেজিস্ট্রেশন থাকতে হবে।
ই-কপিরাইট সেবা
২০১৭ সালের ২৩ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রোগ্রাম ও সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসের যৌথ আয়োজনে ‘ই-কপিরাইট সেবা’ উদ্বোধন করা হয়।
ইউএনডিপি এবং ইউএসএইডের কারিগরি সহায়তায় একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রোগ্রামের সার্ভিস ইনোভেশন ফান্ডের সহায়তায় ‘ই-কপিরাইট’ সেবা ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।
জানা গেছে, এই সেবার মাধ্যমে এখন বাংলাদেশের যেকোন জায়গা থেকে যেকোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান তাদের তৈরি সাহিত্যকর্ম, নাট্যকর্ম, সংগীতকর্ম, রেকর্ডকর্ম, চলচিত্রবিষয়ক কর্ম, বেতার ও টেলিভিশন সম্প্রচার, ডিজিটাল কর্ম ইত্যাদি নিবন্ধনের জন্য বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসের ওয়েবসাইট copyrightoffice.gov.bd থেকে আবেদন করতে পারবেন।
আবেদনপত্র স্বয়ংক্রিয় উপায়ে যাচাই-বাছাইয়ের পর পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে এসএমএস এর মাধ্যমে আবেদনকারীকে জানিয়ে দেওয়া হবে।
নির্দিষ্ট তারিখে কপিরাইট নিবন্ধন সার্টিফিকেট প্রদান করা হবে।
এই সেবায় প্রয়োজনে ই-সার্টিফিকেটও পাওয়া যেতে পারে, যা পরবর্তী সময়ে অনলাইনে যেকোন সময় যাচাই করাও যাবে।
কপিরাইট নিবন্ধন করতে এবং এব্যাপারে বিস্তারিত জানতে যোগাযোগ করুন-
কপিরাইট অফিস
জাতীয় গ্রন্থাগার ভবন (৩য় তলা)
৩২, বিচারপতি এসএম মোর্শেদ সরণি
আগারগাঁও, শেরেবাংলা নগর, ঢাকা-১২০৭।
ই-মেইল : [email protected]
ওয়েবসাইট : www.copyrightoffice.gov.bd
ফেসবুক : copyrightoffice
ফোন : +৮৮ ০২ ৯১১৯৬৩২ ফ্যাক্স : +৮৮ ০২ ৮১৪৪৮৯৫
হটলাইন : +৮৮ ০১৫১১ ৪৪০০৪৪
কপিরাইট নিবন্ধন আদালত হবে?
এ বিষয়ে কপিরাইট অফিসের রেজিস্ট্রার বলেন, আমাদের বর্তমান আইনে আলাদা আদালতের কোনো ব্যবস্থা নেই।
পৃথিবীর নানা দেশে আইপি কোর্ট আছে, কিন্তু আমাদের এখানে এখনই দরকার আছে বলে আমি মনে করছি না।
এখানে তিনটি ধাপে অভিযোগ নিষ্পত্তি হয়।
প্রথমে কপিরাইট রেজিস্ট্রারের কাছে অভিযোগ আসে। তিনি যথাযথ শুনানি শেষে সিদ্ধান্ত দেন।
এরপর আপিল নিয়ে যেকোনো পক্ষ কপিরাইট বোর্ডের কাছে যান এবং সেখানে যে আদেশ দেয়া হয় সেখানেও সন্তুষ্ট না হলে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হওয়া যাবে বলেও জানান কপিরাইট অফিসের এই রেজিস্ট্রার।
কপিরাইট, পেটেন্ট এবং ট্রেডমার্কের মধ্যে পার্থক্য কি?
কোন কোন সময় আপনার নিজের মেধার মালিকানারও দাবি করতে হতে পারে। আইনের ভাষায় বাংলায় যাকে বলে মেধাস্বত্ব।
মেধার মালিকানার নিবন্ধন করে নেওয়া জরুরি। এতে ভবিষ্যতের জন্য মালিকানা পাকাপোক্ত হবে।
আসুন জেনে নিই মেধার স্বত্ব বা মালিকানা কিসে থাকে।
কপিরাইট: গান, কবিতা, গল্প, অনুবাদ, নাটক কিংবা উপন্যাস যা-ই লিখুন বা যে বিষয়ে বই বা পাণ্ডুলিপি লিখুন না কেন স্বাভাবিকভাবেই আপনি এর কপিরাইট বা মেধাস্বত্ব লাভ করবেন।
আবার কোনো সফটওয়্যার বা কম্পিউটারের জন্য তৈরি কোনো প্রোগ্রামের জন্যও কপিরাইট দাবি করা যায়।
কোনো ব্যক্তির জীবদ্দশায় আজীবন তিনি কপিরাইটের অধিকারী। তাঁর মৃত্যুর পর ৬০ বছর পর্যন্ত উত্তরাধিকারীরা কপিরাইট ভোগ করবেন।
ট্রেডমার্ক: নিজের ব্যবসার জন্য যদি কোনো নাম বা লোগো ব্যবহার করেন এটিও মেধাস্বত্ব হিসেবে ধরা হয়।
একে ট্রেডমার্ক বলা হয়। ট্রেডমার্ক নিবন্ধন করা জরুরি।
বাংলাদেশের পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্ক অধিদপ্তরের রেজিস্ট্রার বরাবরে পণ্যের ধরন অনুযায়ী নিবন্ধনের আবেদন করতে হবে।
আবেদনপত্র পাওয়া যাবে অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে। বর্তমানে বাংলায় নতুন আবেদন ফরম করা হয়েছে।
আবেদনের সঙ্গে প্রয়োজনীয় আবেদন ফি জমা করতে হয়।
তবে প্রথমেই পণ্য ও সেবার আন্তর্জাতিক শ্রেণিবিভাগ অনুযায়ী আপনার পণ্য কোনো শ্রেণিভুক্ত তা জেনে নিতে হবে।
আপনার ব্যবহৃত ট্রেডমার্ক বা প্রস্তাবিত ট্রেডর্মাকের সাথে অন্য কোনো মার্কের মিল আছে কি না তা আগে থেকেই জানার সুযোগ আছে।
তবে অন্য মার্কের সঙ্গে মিল থাকলে এবং একই নাম আগে ব্যবহৃত হলে নিবন্ধন পাওয়া যাবে না।
ট্রেডমার্ক আইন ২০০৯ অনুযায়ী কোনো নিবন্ধিত ট্রেডমার্ক নকল করলে ট্রেডমার্ক লঙ্ঘনের জন্য মামলা করা যাবে।
আর যদি কোনো অনিবন্ধিত ট্রেডমার্ক নকল করা হয় তাহলে পাসিং অফের (অন্যের পণ্য নিজের নামে চালানো) মামলা করা যাবে।
এসব মামলা করতে হয় জেলা জজ আদালতে।
এ ছাড়া মিথ্যা ট্রেডমার্ক ব্যবহারের জন্য প্রথম শ্রেণির বিচারিক হাকিম বা মহানগর বিচারিক হাকিম আদালতে মামলা দায়ের করা যাবে।
দায়ী ব্যক্তির সর্বনিম্ন ছয় মাস থেকে দুই বছর পর্যন্ত জেল বা সর্বনিম্ন ৫০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ তিন লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।
পেটেন্ট: কোনো জিনিস আবিষ্কার করলে এর পেটেন্ট করানো যায়। আর কোনো কিছুর ডিজাইন থাকলে তারও নিবন্ধন করা যায়।পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্ক অধিদপ্তরে এর নিবন্ধন করা যায়।
পেটেন্ট একটি দেশের কোনো উদ্ভাবককে তার উদ্ভাবনী পণ্যসেবাকে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত এককভাবে নির্মাণ, বিতরণ ও সংরক্ষণ করার অধিকার সনদ।
মসরুর জুনাইদ-এর ব্লগে আরও পড়ুন-
- অবশেষে বন্ধ হবে অবৈধ মোবাইল হ্যান্ডসেট, বৈধতা যাচাই করবেন যেভাবে
- হোল্ডিং ট্যাক্স এবং হোল্ডিং নম্বর
- ঘরে বসে নিজেই বানিয়ে নিন ই-টিআইএন
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে কপিরাইট নিবন্ধন আইন প্রথম তৈরি হয় ১৯৭৪ সালে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে বিষয়বস্তু উপস্থাপনায় পরিবর্তন আসায় ২০০০ সালে নতুন একটি কপিরাইট আইন করা হয়, যা পরে ২০০৫ সালে সংশোধন হয়।
তথ্যসূত্র : পত্রিকা, আর্টিকেল, ওয়েব, ব্লগ থেকে সংগৃহীত ও সম্পাদিত।
আমি মোবাইলে গান শুনে মুখস্ত করে গাই এবং সেগুলি ইউটিউবে আপলোড করি।এখন আমি কি করলে আমার জন্য ভাল হবে?please answer me.
Ami electric bike er model toiri korechi tar jonno patent /copyright/tead mark e abedon korte hobe ?