অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় করা সম্ভব। ফটোগ্রাফি অনেকের জন্য একটি নেশা, আবার অনেকের জন্য পেশা। ফটোগ্রাফি নেশা বা পেশা যা-ই হোক না কেন, চাইলে ছবি অনলাইনে বিক্রি করে বাড়তি আয় করতে পারেন।
ফটো বা ছবি বিক্রি করার জন্য আপনাকে পেশাদারী ফটোগ্রাফার হতে হবে না। ইন্টারনেটে ছবি বেচা-কেনার এমন হাজার হাজার ওয়েবসাইট আছে যেখানে আপনি আপনার তোলা ছবি বিক্রি করতে পারেন।
ডিএসএলআর ক্যামেরাই হোক আর ভালো মোবাইল ফোন ক্যামেরাই হোক, নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট বা ক্রেতার চাহিদা পূরণে সক্ষম যে কোনো ছবিই বিক্রি করে আয় করে সম্ভব।
শাটার স্টক, আই-স্টক ফটো, অ্যালামাই, ফটোলিয়া (অ্যাডোবি স্টক), ক্রেস্টক, বিগস্টকফটো, গেটি ইমেজেস, ড্রিমসটাইমসহ আরও এমন অনেক মার্কেটপ্লেস আছে যেখানে ছবি বিক্রি করা যায়।
ঐ সাইট থেকে যখনই আপনার কোন ছবি বিক্রি হবে আপনি আপনার পেমেন্ট পেয়ে যাবেন।
ছবি বিক্রির ওয়েবসাইটগুলোতে লাখ লাখ ছবি বিভাগ অনুযায়ী সাজানো থাকে ক্রেতাদের প্রদর্শনের জন্য । এক্ষেত্রে, একেক ওয়েবসাইটে ছবি বিক্রির শর্তাবলি একেক রকম। অনলাইনে ছবি ক্রেতার সংখ্যাও কম নয়।
তবে, আপনি যদি ফটোগ্রাফিতে নবিশ হয়ে থাকেন ভাল ক্রেতা পেতে ফটোগ্রাফি সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এবং দরকার হলে কোন প্রফেশনাল ট্রেনিং করে নিন।
মসরুর জুনাইদ-এর ব্লগে আরও পড়ুন-
কারণ, ফটোগ্রাফি একটা শিল্প। আর এই শিল্পে দক্ষ হতে হলে মৌলিক কিছু বিষয় সম্পর্কে ধারণা থাকা দরকার।
অন্যদিকে আপনি যে ছবি বিক্রির জন্য জমা দিবেন সেই ছবি সৃজনশীল এবং আকর্ষণীয় হতে হবে।
যেসব বিষয়ে ধারণা থাকা দরকার ফটোগ্রাফির জন্যে
তরুণদের অনেকেই এখন পড়াশোনা শেষ করার পর গতানুগতিক পেশার পেছনে না ছুটে সৃজনশীল পেশাকে বেছে নিচ্ছেন। এ রকমই একটি পেশা ফটোগ্রাফি।
এসব পেশায় নিজের দক্ষতার পাশাপাশি শৈল্পিক জ্ঞান থাকা অপরিহার্য। এবার জেনেনিন ফটোগ্রাফির জন্যে যেসব বিষয়ে ধারণা থাকা দরকার।
আবেগ নির্ণয় করুন এবং পরিকল্পনা করুন: ফটোগ্রাফিতে সফল হতে হলে আপনাকে একদম নিরপেক্ষ ভাবে দৃশ্যের আবেদনটা নির্ণয় করতে হবে।
আবেগের তাড়নায় নিজের জায়গা থেকে একচুলও নড়া যাবে না।
তাই থাকতে হবে আবেগ নির্ণয়ের ক্ষমতা আর সঠিক পরিকল্পনা। আপনাকে লক্ষ্যে স্থির থেকে উপযুক্ত পরিকল্পনা করে এগোতে হবে।
ক্যামেরার কাজ : ক্যামেরার খুঁটিনাটি সম্পর্কে না জেনে ছবি তোলা শুরু করলে হিতে-বিপরীত হতে পারে। আপনার ক্যামেরা সকল ব্যবহার উত্তম রূপে অবগত হোন।
কোন মেন্যু দিয়ে কী হয়, কোন অপশনটির কাজ কী কোনটিই যেন বাকি না থাকে আর সব সময় সাথে রাখুন ক্যামেরা।
ফটোগ্রাফির টেকনিকগুলো জানুন: যতটা সম্ভব ফটোগ্রাফির টেকনিকগুলো শিখুন। পয়েন্ট, শট, ক্যামেরা ইত্যাদি সম্পর্কে যতটা পারেন জ্ঞান অর্জন করতে থাকুন।
রুল অব থার্ডস : ফটোগ্রাফি জগতে এই ‘রুল অব থার্ডস’ বহুল পরিচিত একটি ধারণা। যার কাছেই ক্যামেরা চালানো শিখতে যাবেন, এ বিষয়ে নিশ্চয়ই তিনি কিছু না কিছু বলে থাকবেন।
কিন্তু এটি সম্পর্কে নিজস্ব কোনো জ্ঞান না রেখে অন্ধ অনুকরণ করলে ছবি প্রায়ই ভালো হয় না।
একটা মৌলিক কথা হল আপনি যদি প্রতিটি শটকে ‘থ্রি-বাই-থ্রি গ্রিডে’ ভাগ করে ছবি তোলেন, তাহলে ছবি ভালো হবে।
ফটোগ্রাফার হিসেবে চোখ ও মন তৈরি করুন: ভাল যন্ত্রপাতি কিংবা ভাল ক্যামেরা না থাকলেও শুধু মন আর চোখ অর্থাৎ নজর থাকলেই আপনি একটি ভাল ছবি তুলতে পারবেন।
ক্যামেরা ফ্রেমের থেকে আপনার মন আর চোখের বিশ্লেষণ করার ক্ষমতাটাই আসল।
সুতরাং ভাল ফটোগ্রাফারদের সঙ্গে কথা বলুন, তাদের মন আর নজর সম্পর্কে ধারণা নিন যাতে তাদের মত দৃষ্টি আপনারও হয়ে ওঠে।
এডিট বা ছবি সম্পাদনা করা শিখুন: আপনি বেসিক সফটওয়্যার থেকে সম্পাদনার অনেক কিছুই শিখতে পারবেন। কমপক্ষে আপনি ফটোশপের মত সফটওয়্যার থেকে সম্পাদনা বেসিক শিক্ষা নিতে পারবেন।
ফোনের ছবি : ফোনে ছবি তোলার সময় দুই হাতই ব্যবহার করা উচিত। ফোন দুই হাতে সুন্দর করে ধরতে হবে, স্থিরভাবে ধরে রাখাটা জরুরি।
নতুবা ছবিটি ঝাপসা হয়ে যাবে, ফ্রেমিং ভালো হবে না। কাঙ্ক্ষিত বিষয়টিও কেটে যেতে পারে, গুরুত্বপূর্ণ কেউ বাদ যেতে পারে।
সাধারণত ভোরবেলায় আলোর গতি তীক্ষ্ণ থাকে, তখন আলো-ছায়ার ছবি সামনের আলোতে অনেক দৃষ্টিনন্দন দেখায়।
মোবাইল ক্যামেরায় পর্দাটা বড় হলে ভালো হয়। তাতে ছবি দেখতে এবং কম্পোজিশনে অনেক সুবিধা হয়।
মোবাইল আড়াআড়ি রেখে ছবি তোলা ভালো। তাতে বেশি সাবজেক্ট নেয়া যায়।
আলোর ব্যবহার : একটি ছবিকে আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য আলোর সঠিক নিয়ন্ত্রণ জরুরি। সঠিক মাত্রার আলোতে ছবির বিষয়বস্তু অর্থবহ এবং আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করা যায়।
ঘরের ভেতর সাধারণ ফ্ল্যাশ লাইটে অথবা দুপুরবেলা ঘরের বাইরে তোলা ছবিগুলোতে অধিক মাত্রায় আলো থাকে।
কিছুটা অন্ধকারাচ্ছন্ন জায়গায় তোলা ছবিগুলোতে বিষয়বস্তু সঠিকভাবে ফুটিয়ে তোলা কঠিন।
ডিএসএলআর হলে বিভিন্ন ধরনের লেন্স ব্যবহার করে দেখতে পারেন। মোবাইল ফোনগুলোতে আবার সাধারণত একাধিক লেন্স ব্যবহারের সুযোগ থাকে না।
তাই বিভিন্ন ডেপথ অব ফিল্ড বা ফোকাস পরিবর্তনের সুযোগও নেই। এ কারণেও মোবাইল ছবি তোলার ক্ষেত্রে সঠিক মাত্রার আলো থাকা গুরুত্বপূর্ণ।
শ্রেষ্ঠ ফটোগ্রাফার: আপনাকে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ফটোগ্রাফারদের সম্পর্কেও জানতে হবে। তাদের দৃষ্টি, কর্ম, জীবন, পেশা, আদর্শ ইত্যাদি আপনার ফটোগ্রাফিতে প্রভাব ফেলবে।
আপনাকে গড়ে তুলতে পারে তাদের মত করে।
ভাল একজন ফটোগ্রাফার বন্ধু বা পরামর্শদাতা খুঁজুন: কিছু ফটোগ্রাফাকে বন্ধু বানিয়ে নিন। তাদের সাথে ছবি তুলুন, শেয়ার করুন, এক সঙ্গে কাজ করুন।
এক বা একাধিক পরামর্শদাতা বের করুন। তাদের কাছ থেকে কোনো না কোনো শিক্ষা পাবেনই।
ফটোগ্রাফির কনফারেন্সেগুলোতে অংশ নিন: একজন সফল ফটোগ্রাফার হতে চাইলে আপনাকে স্থানীয়, জাতীয় কিংবা আন্তর্জাতিক যে কোনো প্রদর্শনী বা সেমিনারে অংশ নিতে হবে।
এ ধরনের কনফারেন্সেও আপনার সরব উপস্থিতি জরুরী।
অনলাইনে ছবি বিক্রি, নিবন্ধন ও মান যাচাই
অনলাইনে প্রতিটি ওয়েবসাইটে ছবি বিক্রি করার আগে নির্দিষ্ট ফরম পূরণ করে নিবন্ধন করতে হয়।
কাজের মান যাচাইয়ের জন্য ওয়েবসাইটে নির্দিষ্টসংখ্যক ছবি জমা দিতে হয় অথবা পোর্টফোলিও তৈরি করতে হয়।
মান যাচাইয়ের পর উত্তীর্ণ ছবিগুলো ওয়েবসাইটে প্রদর্শনের জন্য অনুমতি দেওয়া হয়।
ছবি কারা কেনেন, কেন কেনেন
বিশ্বের বিভিন্ন করপোরেট প্রতিষ্ঠান, বিজ্ঞাপনী সংস্থা, গণমাধ্যম, ব্লগ ও অনলাইন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো মূলত তাদের কাজে ব্যবহারের জন্য অনলাইন থেকে ছবি কিনে থাকে।
সব ধরনের ছবিই অনলাইনে বিক্রি হতে পারে।
ছবির বিষয়বস্তু হতে পারে প্রকৃতি, ভ্রমণ, খাবারদাবার, সাজসজ্জা, শিক্ষা, চিকিৎসা, আন্দোলন, যানবাহন, যন্ত্রপাতি, সামাজিক ও পারিবারিক সম্পর্ক ইত্যাদি।
ছবি বিক্রি করে কত সম্মানী পাওয়া যায়
অনলাইনে ছবি বিক্রির মার্কেটপ্লেস বা ওয়েবসাইটগুলো ছবি বিক্রি করে যে অর্থ পায়, তার নির্দিষ্ট একটি অংশ ছবির মালিককে সম্মানী হিসেবে দেওয়া হয়।
বিভিন্ন মার্কেটপ্লেস বা ওয়েবসাইট ভেদে ছবি বিক্রির ২০ থেকে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ছবির মালিককে সম্মানী হিসেবে দেওয়া হয়।
ওয়েবসাইট বা মার্কেটপ্লেসগুলো বিভিন্ন সাবস্ক্রিপশন প্যাকেজের মাধ্যমে ছবি বিক্রি করে থাকে।
দৈনিক বা মাসিক ছবির সংখ্যার ওপর প্যাকেজের মূল্য নির্ধারিত হয়।
তবে একজন বিক্রেতা যদি একটি নির্দিষ্ট ছবি শুধু একটি নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে (এক্সক্লুসিভলি) বিক্রি করেন, তাহলে বেশি সম্মানী পেতে পারেন আর যদি একটি নির্দিষ্ট ছবি বিভিন্ন ওয়েবসাইটে (নন-এক্সক্লুসিভলি) বিক্রি করেন, তাহলে সম্মানীর পরিমাণ কমে যেতে পারে।
সম্মানীর পরিমাণ কম হলেও ছবি বিক্রির পরিমাণ বেশি হলে কোনো নির্দিষ্ট মার্কেটপ্লেস থেকে বেশি আয় করা সম্ভব।
কাজ শুরুর আগে নিচের বিষয়গুলো মাথায় রাখা ভালো
- নিবন্ধন করার আগে মার্কেটপ্লেসের শর্তাবলি ভালোভাবে জেনে নেওয়া
- বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে স্থান পাওয়া ছবিগুলো দেখে ছবির মান ও ধরন সম্পর্কে ধারণা নেওয়া
- ছবির রেজল্যুশন ও উচ্চতা-প্রস্থের অনুপাত সম্পর্কে সচেতন থাকা
- ছবিতে আলোর পরিমাণ যথাযথ রাখা
- ছবিটি কেনার পর ক্রেতার যেন খুব বেশি সম্পাদনার প্রয়োজন না পড়ে, সেদিকে নজর রাখা
- বাংলাদেশ থেকে টাকা তোলা যাবে কি না
- কত শতাংশ সম্মানী হিসেবে পাওয়া যাবে
- কত দিন পরপর টাকা তোলা যাবে
- সর্বনিম্ন কত টাকা তোলা যাবে
ছবি বিক্রি করার কিছু ওয়েবসাইট
এখানে কিছু সাইট সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা দেয়া হয়েছে যেখানে আপনি আপনার তোলা ফটো থেকে আয় করতে পারেন।
১) 500px Prime: এই সাইটের তথ্য অনুযায়ী বিশ্বব্যাপী প্রায় পাঁচ মিলিয়ন আলোকচিত্রী 500px Prime সাইটে তাদের ছবি সাবমিট করে থাকে।
আপনি প্রতিটি ছবির লাইসেন্স বিক্রি (স্ট্যান্ডার্ড লাইসেন্স $ 250) জন্য ৭০% পর্যন্ত পাবেন, এবং আপনার ছবি বড় বিজ্ঞাপন প্রচারাভিযানে অংশ হতে পারে যদি আপনি তাদের বাণিজ্যিক লাইসেন্সিং জন্য জমা দেন।
প্রথমে prime.500px.com এ একটি ফ্রি অ্যাকাউন্টের জন্য সাইন আপ করুন। তারপর আপনার ফটোগুলি জমা দিন, আপনার ক্যাটালগ বৃদ্ধি করুন এবং প্রতিটি চিত্র (মডেল, তারিখ সহ) জন্য প্রয়োজনীয় ফর্মগুলি পুরন করুন।
এই সাইটে যে ছবি গুলো জমা দিবেন তাদের সর্ত অনুযায়ী আপনি আর অন্য কারো কাছে ছবিটির লাইসেন্স দেয়া বা বিক্রি করতে পারবেন না।
এখানে দামের একটি গ্যাপ লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু যখন আপনি নিয়মিত ছবি বিক্রি করতে থাকবেন তখন আস্তে আস্তে বেশি দাম পাবেন।
২) SmugMug Pro: SmugMug প্রো আপনাকে আপনার ইমেজ জন্য 85% পর্যন্ত কমিশন দিয়ে থাকে।
এজন্য অবশ্য আপনাকে মিনিমাম মাসিক ১২.৫০ ডলার সাবস্ক্রিপ্সন ফি দিয়ে সাইন আপ করতে হবে।
এই সাইটে আপনি বিনা মুল্যে আকাউন্ট খুলতে পারবেন না।
নিজের উঠানো ছবি বিক্রি করে প্যাসিভ ইঙ্কাম করতে SmugMug Pro তে একটি অ্যাকাউন্ট খুলে ফেলুন এবং ছবি আপলোড করে অপেক্ষা করুন।
ছবি বিক্রি থেকে জে আয় হবে তা অন্য যে কোন ফ্রিল্যান্সিং থেকে বেশি হবে।
৩) Shutterstock
শাটারস্টক এ প্রতি ইমেজ ডাউনলোডের জন্য $ 120 পর্যন্ত আয় করা যায়।
এই সাইটের আবেদন প্রক্রিয়া একটু জটিল, কিন্তু যদি একবার আপনি এই ওয়েবসাইটের সদস্য হতে পারেন এবং নিয়মিত ভাল মানের ছবি আপলোড করেন তাহলে আপনার আজীবনের আয়ের একটা ভাল মাধ্যম হতে পারে শাটারস্টক।
সারা পৃথিবীতে প্রতি বছর 500 মিলিয়নেরও বেশি ছবি ডাউনলোডের মাধ্যমে ফটোগ্রাফার রা মোট $ 300 মিলিয়নের বেশি উপার্জন করেছেন।
এছাড়াও Shutterstock স্টক ভিডিও ফুটেজ, এইচডি এবং 4K ভিডিও সহ, ইমেজ এবং ভেক্টর বিক্রি করে থাকে।
তাই চাইলে এগুলো থেকেও ইনকাম করতে পারেন।
আপনি আপনার প্রথম আপলোড করা ছবি থেকে ছবির মান অনুযায়ী ৪ সেন্ট থেকে $ 200 পর্যন্ত আয় করতে পারেন।
৪) iStockphoto: এই সাইটটি ২০০১ সাল থেকে অনলাইনে স্টক ছবি বিক্রি করে আসছে।
এটি একটি পুরাতন সাইট, এবং এটি ফটোগ্রাফার দের একটি বিস্তৃত নেটওয়ার্ক।
এখানে নতুন আবেদনকারীকে নিশ্চিতভাবে নিশ্চিত করে যে তারা তাদের ছবি বিক্রি করে অনলাইনে ভাল পরিমানে আয় করতে পারবেন।
মসরুর জুনাইদ-এর ব্লগে আরও পড়ুন-
- কেন পেশাদার ই-মেইল ঠিকানা থাকাও জরুরি?
- লিংকডইন সঠিকভাবে ব্যবহারের টিপস
- জেনে নিন কপিরাইট নিবন্ধন করার নিয়মকানুন: ঘরে বসেই ই-কপিরাইট!
আবেদন করতে, আপনার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত বিভাগ (ছবি, ভিডিও বা অডিও) নির্বাচন করুন এবং একটি অ্যাপ্লিকেশন ফর্ম পূরণ করুন।
IStockphoto টিম আপনার যোগ্যতা পর্যালোচনা করবে এবং আপনাকে তাদের সামনে যোগ্য প্রমান করতে একটি সংক্ষিপ্ত ক্যুইজে অংশ নিতে হবে।
তারপর চূড়ান্ত ভাবে আপনাকে নির্বাচন করতে তারা আপনার কিছু কাজ / ছবি দেখতে চাইবে।
সেগুল আপলোড করুন এবং অপেক্ষা করুন। আপনার কাজ তাদের পছন্দ হলে আপনি iStockPhoto এর সদস্য হয়ে যাবেন।
একবার iStockPhoto থেকে আপনার ছবি বিক্রি হলে, আপনি সর্বনিম্ন পাবেন ১৫%।
এছাড়া এদের এক্টা ফিচার নিয়ে আপনি বিক্রিত ছবির ৪৫% পর্যন্ত পেতে পারেন।
৫) Etsy: Etsy তে বিবাহের ছবি, বিভিন্ন অনুষ্ঠানের ছবি এবং বিভিন্ন থিমযুক্ত ছবি বিক্রয়ের জন্য একটি ভাল ওয়েবসাইট।
ফি ফিচারটি প্রাথমিক অবস্থায় একজন ফটোগ্রাফারের জন্য উপকারী হলেও (Etsy প্রতিটি বিক্রয়ে ২0 সেন্ট এবং বিক্রয়ের দামের 3.5% কেটে রাখে), ফলে বিনা খরচে আপনি আপনার ছবি বিক্রয় করে অতিরিক্ত আয় করতে পারবেন।
৬ ) এলামে (alamy) : পৃথীবির সবচেয়ে বড় স্টকফটো লাইব্রেরী হচ্ছে এলামে। এখানে আপনাকে ৬০% হারে রয়ালেটি রেট পেমেন্ট করে থাকে।
সবচেয়ে বড় কথা এখানে এক্সকুলুসিভ ইমেজ রাইট দেয়ার জন্য কোনো প্রাকার চাপ থাকে না। অর্থাৎ এই সাইটে সাবমিট করা ছবি আপনি অন্য সাইটে ও সাবমিট করতে পারবেন
৭) গেট্টিইমেজেস (gettyimages) : ২০১০ সালে ফ্লিকার এবং গেটিমেজেস সাইট মিলে এমন একটি প্লাটফ্রম যেখানে ফটোগ্রাফারা রায়ালেটি ফ্রি ছবি দিয়ে ও বিক্রি করতে পারবেন এবং তাদের কপিরাইট ও নিয়ন্ত্রন করা হবে।
এখানে ছবি দিয়ে অপেক্ষা করতে হবে এপ্রুভালের জন্য। প্রতিটি ছবি বিক্রির জন্য ২০% রয়ালেটি আপনি এখানে পাবেন।
তবে এই মূহর্তে কিছুদিন যাবত এখানে ছবি নেয়া বন্ধ রাখা হয়েছে।
তারা বলেছে কয়েক সপ্তাহ পর থেকে আবার এটি ওপেন করে দেয়া হবে।
৮) ফটোলিয়া (fotolia) : ফটোলিয়াতে ৪০ লক্ষ এর ও বিশি ক্রেতা রয়েছে এদের আয়াত্তে, রয়ালেটির পরিমান ও খুব ই ভালো।
প্রতিটি ছবি বিক্রির জন্য আপনি এখানে ২০% থকে ৬৩% প্রর্যন্ত রয়ালেটি পাবেন। টাকা সঙ্গে সঙ্গে আপনার একাউন্টে জমা হয়ে যাবে
৯) ওয়ানটুথ্রিআরএফ (123RF) : কি পরিমান ছবি আপনি রেগুলার এখানে আপ্লোড করছেন তার উপর ভিত্তি করে আপনি কত শতাংশ রয়ালেটি পাবেন তা ধার্য করা হয়।
যারা সারা দিন ছবি তোলেন তদের জন্য চমৎকার একটি সাইট হচ্ছে ওয়ানটুথ্রিআরএফ ।
এখান থেকে আপনই ৩০% থেকে ৬০% পর্যন্ত রয়ালেটি পেতে পারেন।
১০) Red Bubble: অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় করার ওয়েবসাইটগুলোর মধ্যে একটু ভিন্ন।
আপনার ছবিগুলো যদি ইনস্টাগ্রাম ফ্রেন্ডলি হয়, তাহলে আপনি Red Bubble ক্রেতা খুঁজতে পারেন।
এই সাইট শুধু যে আপনার ছবি বিক্রি করবে তা নয়, তারা আপনার ছবির সাথে অন্য পণ্য সম্পর্কেও বার্তা দিবে।
১১) PhotoShelter: এটি বিশ্বজুড়ে প্রপেশনাল ফটোগ্রাফারদের কাছে একটি সুপরিচিত ওয়েবসাইট।
এখানে আপনি যদি আপনার ক্যামেরার শেল্পিক কাজ বা ছবি বিক্রি করতে চান, তাহলে আপনি PhotoShelter থেকে বিল্ট ইন ইকমার্সের সাথে একটি পেশাদার ফটোগ্রাফি ওয়েবসাইট সেট আপ করতে পারেন।
PhotoShelter সিস্টেমটি অনেক আধুনিক এবং আপনার ইমেজকে আর সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলবে এ ওয়েবসাইটের ইন্টারফেস।
ছবি বিক্রি ফটোগ্রাফার হতে হলে যেসব সরঞ্জাম দরকার
প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার হতে হলে আপনাকে মান সম্মত সরঞ্জাম কিনতে হবে। এই ব্যয় আপনার এই পেশার প্রধান ব্যয়।
তাই শুরুতেই ভাল মানের ক্যামেরা, লেন্স, মেমরি কার্ড, ফ্ল্যাশ, tripod, monopod, কার্ড রিডার ও ক্যামেরা ব্যাগ কিনতে হবে।
এছাড়া ছবি এডিটিং করার জন্য ভাল মানের ল্যাপটপ ও সফটওয়্যার থাকতে হবে।
সব চেয়ে ভাল হয় যদি আপনি এই সব সরঞ্জাম আগে ভাড়া নিয়ে নিজের দক্ষতা যাচাই করতে পারেন। এছাড়া আপনার ব্যবসা প্রসারে একটি ওয়েবসাইট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থাকতে হবে।